Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    ক্ষেতের আলু নিয়ে চিন্তিত চাষীরা







    তানোর প্রতিনিধিঃ রাজশাহীসহ বরেন্দ্রের মাঠে মাঠে পরিপক্ক হয়ে উঠেছে আলু। কিছু উঠতেও শুরু করেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্ষেত থেকে পুরোপুরি আলু উঠে যাবে এমন আশায় বুক বেধেছিলেন চাষীরা। কিন্ত আলু চাষীদের সে আসা যেন ফাল্গুনের কয়েক দফা বৃষ্টিতে হঠাৎ ধুলিশাত হতে বসেছে।
    মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকাল পর্যন্ত তিন দফা বৃষ্টিতে রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে বিশেষ করে ক্ষেতের আলু ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকসহ মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। ক্ষেত থেকে আলু উঠার মুহুর্তে এমন বৃষ্টিতে পচন ও দাগ হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। যদি তাই হয় তবে ব্যাপক লোকসানে পড়তে হবে আলু চাষীদের। এ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা।
    রাজশাহীর আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক বেদল কুমার মৈত্র বলেন, রাজশাহীতে মষুল ধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বুধবার তিন দফায় ১৩ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী অঞ্চলে।
    এর আগে সকাল ছয়টায় দশমিক দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। সকাল পৌনে ১১টার ও সর্বশেষ দুপুর ২ টা ২০ মিটি থেকে ৩টা পর্যন্ত ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।
    তিনি বলেন, সকালে বাতাসের আদ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশে মেঘ রয়েছে তাই আবার বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে এই কর্মকর্তা জানান।
    আগের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকে আকাশে মেঘের আনাগনা। রাতের দিকে কফোঁটা বৃষ্টি ঝড়লে পরে থেমে যায়। সকালের দিকে আকশ জুড়ে ছিলো মেঘর ভেলা। কখনো কখনো আকাশে সূর্যে উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে থেমে থেমে কয়েদফা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়।
    রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় চলতি ২০১৮-২০১৯ কৃষিবর্ষে আলুচাষ হয়েছে ৬৩ হাজার ২৩ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে রাজশাহীতে ৩৮ হাজার ৯৭১ হেক্টর, নওগাঁয় ২৩ হাজার হেক্টর, নাটোরে ৭৩৭ হেক্টর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক হাজার ৩১৫ হেক্টর।
    রাজশাহীর তানোর উপজেলার চুনিয়া পাড়ার গ্রামের আলু চাষী জয়নাল জানান,চলতি বছর ১২ বিঘা জমিতে আলু চাষাবাদ করেছেন। ক্ষেতে আলু ভালই হয়েছিল। এ বছর আলুর দাম ভাল পাওয়ার আশাই ছিলেন তিনি। গাছগুলো তুলে ফেলা হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে আলু তোলার কথা রয়েছিল তার।
    কিন্ত ফাল্গুনের বৃষ্টি তার সব আশা যেন ধুলিশাত হতে বসেছে। বৃষ্টিতে ক্ষেতের আলুতে পচন বা দাগ হলে দামে অর্ধেক নেমে আসবে। এতে ব্যাপক লোকসান গুণতে বলে বলে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি।
    একই উপজেলার চিমনা গ্রামের আলু চাষী হানিফ হোসেন দুলু জানান, প্রতিবিঘায় আলু উৎপাদন হয় প্রায় ৪ টন। সবমিলিয়ে উৎপাদন খরচ হয় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার। দুই বছর আগে আলুচাষ করে পুঁজি হারিয়েছেন তিনি। গত বছর উঠেছে উৎপাদন খরচ। এবার লাভের আশা দেখছিলেন তিনি। কিন্তু তার লাভের আশায় যেন গুড়েবালি দিয়ে দিয়েছেন ফাল্গুনের বৃষ্টি। আলুর শেষ সময়ে বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি আশঙ্কা করছেন তিনি।
    রাজশাহীর তানোর উপজেলার মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমশের আলী জানান,ফাল্গুনের শুরুতে একবার হালকা বৃষ্টি হলে রবিশস্য ফসলের অনেক উপকার হয়। তবে বুধবার যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে আলু চাষীদের অনেক চিন্তায় ফেলেছে। পাশাপাশি রবিশস্যর ও কিছুটা ক্ষতি হতে পারে।
    তিনি আরো জানান, বর্তমান ক্ষেত থেকে আলু তোলার প্রস্ততি শুরু করেছেন চাষীরা। তারা গাছও তুলে ফেলেছেন। এর মধ্যে যে পরিমাণ বৃষি হয়েছে তাতে আলু গায়ে দাগ লেগে যেতে পারে,এছাড়াও ক্ষেতে পানি জমা থাকলে পচে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
    তিনি আরো জানান,বুধবার বৃষ্টি হওয়ার পরে আমরা মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিন মাঠে গিয়ে কৃষকদের আলুর ক্ষেত থেকে পানি নামানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে পুনোরাই রোদের তার বৃদ্ধিপাই তবে অনেক ক্ষতি কমে আসবে বলে আশা করছি আমরা।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728