রাবিতে ব্যতিক্রমী ‘আনর্ত’ নাট্যমেলা শুরু
রাবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ও ভারতের থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রথমবারের মতো দুইদিনব্যাপি ব্যতিক্রমী নাট্যমেলা শুরু হয়েছে। থিয়েটার পত্রিকা ‘আনর্ত’র আয়োজনে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবন প্রাঙ্গণে এই মেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
এসময় তিনি বলেন, থিয়েটারকে নিয়ে নানা রকমের স্বপ্ন আমরা দেখছি। তাই আমাদেরকে বাংলা নাটক নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ সংস্কৃতিটাকে একটা শক্তি হিসেবে পরিচিত করানোর পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলা নাটকের শক্তিটাকে উদ্ধার করা এবং আর্ন্তজাতিক বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হোক আমাদের নাট্য আন্দোলনের অংশ।
পরে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, লিয়াকত আলী লাকী, বিপ্লব বালা, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, রহমত আলী, অধ্যাপক মলয় ভৌমিক প্রমূখ।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, সিরাজী ভবনের সামনের মেহগনি বাগানে রাবি ও দেশের বিভিন্ন নাট্যসংগঠনের সারি সারি স্টল বসেছে। তাতে সাজানো আছে সংগঠনগুলোর প্রকাশিত পত্রিকা, বিভিন্ন অর্জনের সব মেডেল ও সম্মাননা ক্রেস্ট, দুলর্ভ কিছু ছবি ও বই। এক পাশে বানানো বিশাল এক মঞ্চ। তাতে লাগাতার চলছিল গান, নাট্য প্রদর্শন, কখনওবা আমন্ত্রিত অতিথিদের আলোচনা। গ্রুপ থিয়েটার, গ্রাম থিয়েটার, থিয়েটারের মানুষ সকলেই মিলিত হয়েছিলেন মেলায়। মেলা ঘিরে মিলনমেলায় পরিণত হয় সিরাজী ভবন প্রাঙ্গন।
নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, লিয়াকত আলী লাকী, অংশুমান ভৌমিক, মলয় কুমার ভৌমিক, বিপ্লব বালাসহ দুই বাংলার মঞ্চ ও টিভি নাটকের জনপ্রিয় প্রায় ৬০ জন নাট্যব্যক্তিত্ব এইমেলায় উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনকে সকল গোত্রের, দলের, মতের উর্দ্ধে এসে একটি সম্মিলিত পাটাতন হিসেবে উল্লেখ করেন অতিথিরা।
নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, নাটক যে শিল্পের অংশ, মানুষকে মানবিক করার অংশ, বুদ্ধিবিত্ত করার অংশ। এই বিষয়টি মানুষকে বোঝানো কঠিন। এ কারণে নাটক নিগৃহিত হয়, রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা থাকেন তারা নাটককে গুরুত্ব দিতে চান না। তাই পরিশিলিত শিল্পের চর্চার কারণেই নাটককে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, নাটক যে শিল্পের অংশ, মানুষকে মানবিক করার অংশ, বুদ্ধিবিত্ত করার অংশ। এই বিষয়টি মানুষকে বোঝানো কঠিন। এ কারণে নাটক নিগৃহিত হয়, রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা থাকেন তারা নাটককে গুরুত্ব দিতে চান না। তাই পরিশিলিত শিল্পের চর্চার কারণেই নাটককে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলা একাডেমী পদকজয়ী নাট্যকার ও রাবি অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, আনর্ত একটি মঞ্চ এই মঞ্চ থেকে আমরা চিৎকার করে বলতে চাই পৃথিবী অসাম্প্রদায়িক হোক, ভেদাভেদ নাই হয়ে যাক, যুদ্ধ পালিয়ে যাক, সম্প্রীতি বাড়ুক।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সবুজ পারভেজ বলেন, নাটকের জগতে দিকপালদের নিয়ে এত সব আয়োজন এমন আমি কোথাও দেখিনি। নিঃসন্দেহে এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
নাট্যমেলাটির আয়োজক নাট্যপত্রিকা ‘আনর্ত’র সম্পাদক ও নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি আতাউর রহমান রাজু। তিনি জানান, দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনে আরও থাকছে নাটক, নাটকের গান, নাট্য-আড্ডা, বৈঠক, আর বিরতিহীন সৌহার্দ্য বিনিময়: থিয়েটারের মানুষে-মানুষে। মঙ্গলবার এই মেলার পর্দা নামবে।
No comments