টেনশনে গোদাগাড়ী-চারঘাটের প্রার্থীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রচার-প্রচারণার শেষ সময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন রাজশাহীর আট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। নাওয়া খাওয়া ভুলে দৌড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দেখাচ্ছেন ভোটারদের উন্নয়নের পরিকল্পনা। অধিকাংশ প্রার্থী ক্ষতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা হলেও ভোট নিয়ে বাড়ছে তাদের মধ্যে টেনশন। তবে ভোটারদের ভাষ্য, যিনি সত্যিকার অর্থে উন্নয়ন ঘটাবেন, যিনি মাদকমুক্ত এলাকা গড়ে তুলে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন তাকেই ভোট দেবেন।
নির্বাচণ অফিস সুত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১০ মার্চ। প্রার্থীরা প্রচারনা চলাতে পারবেন ৮ মার্চ দিনগত রাত ১২ টা পর্যন্ত। অর্থাৎ শুক্রবার রাত ১২ টার পরেই বন্ধ যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচণের প্রচার-প্রচারণা। সময় ফুরিয়ে যাবার আগেই প্রতিটি বাড়ীর দরজায় কড়া নাড়তে চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফকরুল ইসলাম (নৌকা) ও নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী এ্যাড. টিপু সুলতান (মোটর সাইকেল) এবং জাতীয় পার্টির এ্যাড. ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল)। তিনজন প্রার্থীর মধ্যে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী ফকরুল ইসলাম। তিনি সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত অবিরাম ছুটে চলেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোটারদের শোনাচ্ছেন উন্নয়নের পরিকল্পনা। বিজয়ের পরে মাদক প্রতিরোধ, বাল্য বিয়ে বন্ধ, নারী নির্যাতনসহ যুবকদের কর্মসংস্থানে ব্যবস্থা করা হবে বলেও ঘোষনা দিচ্ছেন তিনি।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী টিপু সুলতানের প্রচারনা মাঠে থাকলেও প্রচারনায় নেই জাপার প্রার্থী ইকবাল হোসেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও প্রচারনার মাঠে দৌড়াচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানরা। তারা ভোটারদের দেখাচ্ছেন আলোর স্বপ্ন। বিজয়ের পরে চারঘাটের উন্নয়নে তারা কাজ করবেন বলে ঘোষনা দিচেছন।
এ উপজেলায় চারঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চার জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্বীতা করছেন। প্রার্থীরা কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নেতা ও সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সকলের সহযোগিতায় ও দোয়া প্রার্থনা করছেন। এতে করে প্রচারে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। শেষ মুহুর্তে ভোটারদের মাঝে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান কে হচ্ছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। তবে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা প্রতিক) এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে আব্দুল মালেক (টিউবওয়েল প্রতিক)।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিক বরাদ্দ পর থেকে প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণায় নামলেও ভোটের মাঠে মূল লড়াইয়ে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা), জাতীয় পাটির এ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দীন বিশ্বাস (লাঙ্গল) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বদিউজ্জামানের (আনারস) মধ্যে। ওয়াকার্স পাটির প্রার্থী সাইদুর রহমান (হাতুড়ী) প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাণ কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত ও পদ্মা নদী ঘেষা গোদাগাড়ী উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৩৪। এর মধ্যে মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ৯।
এদিকে বৃহস্পতিবার নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গোদাগাড়ী পৌরসভা, বাসুদেবপুর, মোহনপুর ও মাটিকাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে নৌকা প্রতিকে ভোট চান। জাতীয় পাটির প্রার্থী এ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দীন বিশ্বাস গণমাধ্যমে সাক্ষাতকার দেয়া ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে লাঙ্গল প্রতিকে ভোট চান। বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে আনারস প্রতীকে ভোট চেয়েছেন বদিউজ্জামানও।
No comments