Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    চয়নকে মামলা থেকে বাঁচাতেই প্রতিবন্ধী শরিফুলের মিথ্যাচার

    চারঘাট মডেল থানার ওসির কক্ষে প্রতিবন্ধী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে ওসি নজরুল ইসলাম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল হক।
    শরিফুল ইসলাম একজন প্রতিবন্ধী। বাড়ি চারঘাট উপজেলার ডাকরা গ্রামে। জন্মগতভাবেই তার পা দুটি অস্বাভাবিকভাবে ছোট।আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধী মানুষরা অনেক সহানুভূতি পেয়ে থাকেন, শরিফুলের ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। কিন্তু শরিফুলের এই প্রতিবন্ধী ইমেজটাকে কাজে লাগিয়ে একজন মামলার আসামী তার মামলাকে বিপথে পরিচালানা করার চেষ্টা করেছেন।
    গত রোববার শরিফুলের কিছু কথার উপরে ভিত্তি করে কোনো রকম অনুসন্ধান ছাড়া কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় "১০ দিন থানায় বসিয়ে রেখেও মামলা নেননি ওসি" শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হয়। কিন্তু জানা যায়, শরিফুল লিখিত অভিযোগ নিয়ে কখনও থানায় যাননি। থানায় মাত্র দুদিন গিয়েছেন চয়ন নামের এক ব্যাক্তির সাথে।
    আজ সোমবার সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, অনলাইন নিউজে প্রকাশিত সংবাদের ঠিক উল্টো চিত্র। চয়ন নামের এক ব্যাক্তি নিজে মামলা থেকে বাঁচতে প্রতিবন্ধী শরিফুলকে ব্যাবহার করার চেষ্টা করেছে নানা ভাবে। আর শরিফুলও চয়নের কাছে থেকে কিছু সুবিধা নিয়ে চয়নের কথা মত কাজ করেছেন।
    চয়ন নামের সেই ব্যাক্তি জামিনে থাকা একজন আসামী। চয়নের ও তার আপন ভাইয়ের জমি জামা সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদ দীর্ঘদিনের। তার ভাইয়ের প্রতিবন্ধী মেয়েকে মারধর করার একটি মামলাতেই তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
    প্রতিবন্ধী শরিফুল সেই চয়নকে সাথে নিয়েই গত ৬ই জুন চারঘাট মডেল থানায় আসেন একটি অভিযোগ দিতে। শরিফুলের সাথে সেদিন চারঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রায়হানুল হক রানাও উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগটা ছিল চয়নের, শরীফুলের না।
    এদিকে তারপর পরদিনই চয়নের মামলার বাদী তার আপন ভাই থানায় এসে চয়ন ও শরিফুলের নামে ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারনে জিডি করেন। তারা জিডিতে উল্লেখ করেন, চয়নের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে চয়ন ও শরিফুল নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
    এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রায়হানুল হক রানা বলেন, শরিফুল ৬ই জুন আমাকে সাথে চারঘাট মডেল থানায় চয়ন নামের এক ব্যাক্তির অভিযোগ জমা দেয়। অভিযোগটা ছিল চয়ন ও তার ভাইয়ের বাগান নিয়ে দ্বন্দ্বের। অফিসার ইনচার্জ তাৎক্ষণিক ঘটনা তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠিয়েছেন। কিন্তু চয়নের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
    সার্বিক বিষয়ে চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম বলেন, শরিফুল যেদিন থানায় চয়নের অভিযোগ নিয়ে যায়, সেদিন আমার সাথে দেখা করেও গেছে। ওসি সাহেব পুলিশ পাঠিয়েছিল ঘটনা তদন্তে সেটাও আমি অবগত ছিলাম। কিন্তু তারপরেও তৃতীয় কোনো পক্ষ শরিফুলকে দিয়ে পুনরায় অভিযোগ দেওয়া, কোর্টে মামলা করা, এসবগুলো করিয়েছেন বলে জানান তিনি।
    জানতে চাইলে শরিফুল ইসলাম আমার রাজশাহীর এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি থানায় চয়নের অভিযোগ নিয়ে মাত্র দুইদিন গিয়েছিলাম। ওসি স্যার তখনই অভিযোগটা দেখতে পুলিশ পাঠিয়েছেন। ওসি মহোদয় আমাকে তার অফিসে বসিয়ে নাশতা করিয়েছেন। আমাকে সাথে নিয়ে ছবিও তুলেছেন। আমি সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও পোস্ট করেছি।
    তিনি আরো বলেন, অন্য একদিন থানায় গিয়ে ওসি স্যারকে পাইনি, সেজন্য ঘুরে এসেছি। পরে চয়ন আমাকে তার নিজ খরচে মামলা করার জন্য কোর্টে নিয়ে যায়। আমি তার কথামত কোর্টে গিয়ে মামলা করি। মামলার বিষয়ে ওসি স্যারের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই, কারন আমি লিখিত অভিযোগ নিয়ে কখনও থানায় যাইনি।
    এ বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, শরিফুল কখনও লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। চয়ন নামের এক ব্যাক্তির অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছিলো আমি তাৎক্ষণিক ব্যাবস্থা গ্রহন করেছি। এ সংক্রান্ত সব অভিযোগুলো বিজ্ঞ আদালতেও প্রেরণ করেছি এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদে ঐরকম কোন বক্তব্য দেননি বলেও জানান তিনি।
    উল্লেখ্য, আজ সোমবার চারঘাট উপজেলা আইন শৃঙ্খলার সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদের সকল চেয়ারম্যানগণসহ উপস্থিত সকল কর্মকর্তাগন চারঘাট মডেল থানার ভাররাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামের নামে মিথ্যা বানোয়াট কথা ছড়ানোয় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728