চারঘাটের অধিকাংশ স্কুলে নেই মানসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক ,চারঘাট:
শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থা রাখার পরিপত্র জারি করলেও রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে তা মানা হচ্ছে না।
সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই এই নির্দেশনা মানছে না।চারঘাট পৌরসভাসহ ছয় ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রাথমিক, কিন্ডার গার্টেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এই প্রতিবেদককে এই বিষয়ে অভিযোগ করেন।
২০১৫ সালের ২৩ জুন স্যানিটেশন ব্যবহার উন্নয়নে ১১টি নির্দেশনা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাড়াতে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে টয়লেট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের নির্দেশনাও দেওয়া হয় পরিপত্রে।
পরিপত্রে টয়লেটে ঢাকনাযুক্ত প্লাস্টিকের পাত্র রাখা, জেন্ডারবান্ধব স্যানিটেশন নিশ্চিত করা, ছাত্রীদের পিরিয়ডের বিষয়ে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়াসহ ১১টি নির্দেশনা দেওয়া আছে। উপজেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর জন্য একটি টয়লেট আছে, তবে তাও নাজুক!
চারঘাট ইউনিয়নের এক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আলামিন ইসলাম (১১) বলে, “আমাদের বিদ্যালয়ে টয়লেট খুবই অপরিষ্কার, ব্যবহার করা যায় না। তহমিনা খাতুন (১০) আরেক শিক্ষার্থী বলে, “কল থেকে পানি নিয়ে গিয়ে টয়লেটে যেতে হয়। আর সাবানও নাই।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক এই প্রতিবেদককে বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। আগে আমাদের শিক্ষকদের টয়লেট ছিল না, এখন হয়েছে। এটাও আস্তে আস্তে হবে।
বুধবার উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক, কিন্ডার গার্টেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজে গিয়ে কথা হয় সংশ্লিষ্ট ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে। টয়লেট তো দূরের কথা, টিউবওয়েলও বিশুদ্ধ পানি ওঠে না কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন, “ স্কুলে মেয়েদের জন্য পরিষ্কার ও ব্যবহার উপযোগী টয়লেট থাকা জরুরি। “ঋতুকালে যেন তারা বিদ্যালয়ে স্যানিটেশনের সুবিধা পায় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।এমনিতেই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার ব্যবহার করলে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ব্যক্তিরা কৃমি, পেটের পীড়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।"
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রশিদা ইয়াসমিন জানান, এ ব্যাপারে আমরা সব সময়ই তৎপর। আমাদের কাজ চলমান আছে। উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
উল্লেখ্য, ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শতকার ৮৪ ভাগ বিদ্যালয়ে টয়লেট থাকলেও সেগুলোর মাত্র ২৪ ভাগ উন্নত, ব্যবহারোপযোগী ও পরিচ্ছন্ন। প্রতিবন্ধী শিশুদের ব্যবহার উপযোগী পয়ঃনিষ্কাশন অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। এছাড়া মাত্র ২২ শতাংশ স্কুলে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট আছে!
No comments