চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফুল আর ফুটলো না
আব্দুল মতিন, চারঘাট:
যেখানেই থাকবো কাজ করে যাব। আমি এখান থেকে চলে গেলেও এ প্রতিষ্ঠানটি যেন তার সুনাম ধরে রাখতে পরে। অসহায় ও গরীব মানুষ তাদের সেবা পেতে পারে।আমি সে উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করছি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটক থেকে পুরো এলাকাজুড়ে থাকবে হরেক রকমের ফুলের গাছ। ফুলে-ফুলে সাজানো হবে পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শোভা পাবে গোলাপ, গাঁদা, জবা, মালতী, চন্দ্র মল্লিকা, মোরগ ফুল, কসমস, ডালিয়া।সবমিলিয়ে হাসপাতালটি হয়ে উঠবে একটি ফুল বাগান।কথা গুলো বলেছিলেন চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আফসানা আলমগীর খান।
ডা: আফসানা আলমগীর খান মাত্র ৩ মাস ২০ দিন চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সল্প সময়ের মধ্যেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন।এক সময়ের ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হওয়া হাসপাতাল কে ঝকঝকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে তোলেন।হাসপাতালের পুরো এলাকা জুড়ে নিজ হাতে গাছ লাগানো শুরু করেন।বাগান তৈরির কাজও শুরু করেন।হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেন।
কিন্তু গত ১০ ই নভেম্বর হঠাৎ করেই সরকারী এক আদেশে ডা: আফসানা আলমগীর খানের বদলি হয়।তার বদলিতে চারঘাটবাসী হতাশা প্রকাশ করেন।তিনি যে ফুল বাগান ও চারঘাটে স্বাস্থ্য সেবায় নতুন ফুলের সপ্ন দেখিয়েছিলেন তার বাস্তবায়ন নিয়েও আফসোস করেন।
সাধারন মানুষের ভোগান্তির অভিযোগ পেয়ে রবিবার সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়,সাধারন মানুষের আশঙ্কার কথাই সত্যি হয়েছে।আবারও বদলে গেছে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চেহারা।বদলে গেছে ডাক্তারদের ব্যবহার।আবারও সাধারন মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ডাক্তারদের বাজে ব্যবহারে ঘুরে যাচ্ছে।আর বিভিন্ন ক্লিনিকের দালাল ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রবিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে দেখা যায় জুনিয়র কনঃ শিশু ডা: শেখ মো: আলী রাশেদ এর রুমের সামনে লম্বা লাইন।কয়েকটি শিশু উচ্চস্বরে কান্না করছে।আশে পাশের কয়েকটি ডাক্তারের রুমও ফাঁকা দেখা যায়।
শিশুর চিকিৎসা নিতে আসা লায়লা বেগম জানান,তার মেয়ের তিন দিন যাবৎ ভীষণ জ্বর।সেজন্য তিনি সকাল ৯ টা থেকে শিশু ডাক্তারের রুমের সামনে অপেক্ষা করছেন।১০ টা ১৫ বেজে গেলেও ডাক্তার আসেনি।তিনি শিশুকে নিয়ে কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা চারঘাট পুলিশিং কমিটির সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন,হাসপাতালের অবস্থা গত ১০ দিনে একেবারে নাজেহাল হয়ে গেছে।আগের মতই অপরিস্কার,ডাক্তারদের রোগীর প্রতি অবহেলা এবং আবারও রাত হলেই মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবায় যে নতুন ফুল ফোটার আশা করেছিলাম,তা নিরাশায় পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবাগত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আশিকুর রহমান সবকিছু শোনার পরে বলেন,আমি একটু ব্যস্ত আছি।এ ব্যাপারে পরে কথা বলবো।পরে তাকে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
No comments