Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    সাইকেলে বাল্যবিয়ে বন্ধের প্রচারাভিযানে কাঠ মিস্ত্রিী আনোয়ার’


     বাঘা (রাজশাহী)  প্রতিনিধি                   
    পেশায় কাঠমিস্ত্রি আনোয়ার হোসেন (৫০)। পেশা ছেড়ে এখন নেমেছেন বাল্যবিয়ে বন্ধের সচেতনতার প্রচারাভিযানে। এ অভিযানে লাল পোষাকের সাথে মিলিয়ে রঙ করেছেন বাই সাইকেলেও। সাইকেলের সামনের দিকে বাঁধা দুটি জাতীয় পতাকা ও একটি লাল পতাকা। এভাবেই দেশের ৬৪ জেলায় বাই সাইকেলে প্রচার অভিযান চালিয়েছেন বগুড়ার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন। বিতরণ করেছেন লিফলেট। ধারাবাহিকতায় বাল্যবিয়ে বন্ধের প্রচারাভিযানে আসেন রাজশাহীর বাঘায়। ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর দুই দিনব্যাপি ঘোরেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
     কথা হলে তিনি জানান, উপজেলার মধ্যে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ২২০ তম। চলার সময়ে রাস্তায় কোথাও কোন স্কুল-কলেজ পেলে সাইকেল থামিয়ে শিক্ষার্থীদের বাল্যবিয়ের কুফল ও লিফলেট বিতরণ করেন।  আনোয়ার হোসেনের বাড়ি বগুড়ার সদর উপজেলার বারপুর উত্তরপাড়া গ্রামে।
    আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারী থেকে বাল্যবিয়ে বন্ধের সচেতনতা প্রচারাভিযান শুরু করেন। বাল্যবিয়ে পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র সবার জন্যই বিপজ্জনক। লাল পোশাক-সাইকেল-পতাকার মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন বাল্যবিয়ে বিপজ্জনক। অভাবের কারনে লেখাপড়া করেছেন পঞ্চম শ্রেণি । তারপর কাজ নেন বগুড়া শহরের একটি রেস্তোরাঁয়। দুই বছর পর চলে যান চট্টগ্রামে। সেখানে আগ্রাবাদ এলাকায় একটি আসবাবের দোকানে কাজ নেন। বিয়ে করেন চট্টগ্রামের কদমতলী এলাকায়। থাকতেন পাঠানটুলি রোডে। সেখানে তাঁর স্কুলপড়ুয়া দুই ভাগনির বিয়ে হয়ে যায়। তখন ওদের বয়স ছিল ১৪-১৫ বছর। কিছুদিন পর দুই বোনই স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরে ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়।
      বাল্যবিয়ের শিকার দুই ভাগনির এমন করুণ পরিণতি তাঁকে পীড়া দেয়। তারপর থেকে খবরের কাগজে বাল্যবিয়ের সংবাদ দেখলে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়তেন এবং সংগ্রহ করেন। বাল্যবিয়ে বন্ধে কিছু একটা করার কথা। দুই যুগ পর চট্টগ্রাম ছেড়ে তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দি যান। সেখানে আসবাবের দোকান দেন। সেখানেও বাল্যবিয়ের নানা ঘটনা ঘটতে দেখেন। তাঁর মন খারাপ হয়। এরপর সিদ্ধান্ত নেন সাইকেলে ঘুরে ঘুরে বাল্যবিয়ের বিরোধী প্রচার চালাবেন। দোকান বিক্রি করে পুরোনো একটি সাইকেল কেনেন। কিছু প্রচারপত্রও ছাপান। তারপর থেকে তিনি সেই সাইকেলে নিয়ে দেশের শহর ও গ্রাম ঘুরে মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন বাল্যবিয়ে বন্ধের সচেতনতা প্রচারপত্র। নিজের টাকা দিয়েই একাজ করছেন বলে জানান তিনি।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728