শীতের রাতে চারঘাটে ব্যাডমিন্টন ‘উৎসব’
আব্দুল মতিন, চারঘাট:
শীত আসলেই আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে এই খেলা বেশ খেলতে দেখা যায়। বলার অপেক্ষা রাখেনা দিন দিন এই খেলা আমাদের দেশে জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেকের কাছে এগুলো পরিচিত নাম। এসব ব্যাডমিন্টন খেলার প্রচলিত কয়েকটি নাম। প্রকৃতিতে আস্তে আস্তে বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া। আর শীত মানেই ব্যাডমিন্টন খেলা। শীতের আগমনী বার্তা বোঝার অন্যতম একটি চিত্র এই খেলাটি। শীত আসলেই গ্রামের প্রতিটি অলিতে গলিতে ব্যাডমিন্টন খেলার ধুম পড়ে। সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি খেলায় অংশ নেন তরুণরা। তালিকা থেকে বাদ পড়েন না মধ্যবয়সী ও মেয়েরাও। তারাও শীতের পরশ বুলানো কুয়াশায় মত্ত থাকেন ব্যাডমিন্টন খেলায়। লাইট, নেট, কর্ক, স্ট্যান্ড টানা খেলতে খেলতে শরীর ঘেঁমে অস্থির। তবুও মানুষ উপভোগ করে খেলাটি। বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেট ও ফুটবল খেলতে অভ্যস্ত থাকলেও ব্যাডমিন্টন নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা কোনো অংশেই কম নয়। বরং শীতকাল আসলেই এই খেলাটি সব খেলাকে ছাপিয়ে যায়।
চারঘাট বাঘার বিভিন্ন এলাকাতে শীতের রাতে অনেককে দলে দলে ভাগ হয়ে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখা যায়। মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান (রকি)নামে একজন ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন, তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
দেশের তরুণদের কাছে এটি ‘মৌসুমী’ খেলা নামে পরিচিত। শীতের রাতের ব্যাডমিন্টন কোর্টগুলো প্রমাণ করে দেয় খেলাটি এই দেশের মানুষের কাছে কতটুকু জনপ্রিয়। সারাদিন কাজকর্মে ব্যস্ত সময় পার করে সন্ধ্যা হলেই তরুণ ছেলেমেয়েরা হাজির হন ব্যাডমিন্টন খেলতে। পাড়ায় পাড়ায় শুরু হয়ে যায় ‘ব্যাডমিন্টন খেলা।
খেলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
খেলাটিতে প্রতিটি দলে দুইজন করে সদস্য থাকে। তবে একজন করেও খেলা যায়। খেলার জন্য দরকার হয় ব্যাট, কর্ক ও নেট।
ব্যাডমিন্টনের কোর্ট সমতল আয়তাকৃতির হয়ে থাকে। একক ও দ্বৈত উভয় ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ১৩.৪ মিটার হবে। দ্বৈতের জন্য কোর্টের প্রস্থ ৬.১ মিটার। নেটের উচ্চতা হবে ১.৫৫ মিটার। ‘র্যাকেট/ব্যাট ক্ষেত্রে’ আন্তর্জাতিক ভাবে কিছু মাপ রয়েছে। র্যাকেটের দৈর্ঘ্য ৬৮ সেমি এর বেশি হবে না এবং প্রস্থে ২৮ সেমি এর চেয়ে বেশি হবে না। ‘কর্ক’ এর ক্ষেত্রে এর ওজন ৫.৫০ এর বেশি হবে না। এর মধ্যে ১৪ থেকে ৬৪টি পালক থাকবে। একক ও দ্বৈত উভয় খেলায় সাধারণত ১৫ থেকে ২১ পয়েন্টে গেম হয়। উভয় দল ২০-২০ পয়েন্ট অর্জন করলে সেক্ষেত্রে ২ পয়েন্ট বেশি পেয়ে জয়লাভ করতে হবে। অর্থাৎ ২০-২২, ২৪-২৮ ইত্যাদি। উভয় দলের পয়েন্ট সমান হওয়াকে ‘ডিউস’ বলে। এভাবে ৩০ পয়েন্টের মধ্যে খেলা শেষ করতে হবে।
খেলার আনুষাঙ্গিক খরচ কোর্ট বানাতে বাঁশসহ খরচ হবে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা, ২০০ থেকে ৪০০ ওয়াটের লাইটের দাম পড়বে দুই থেকে চার হাজার টাকা, কোর্ট টানানোর জন্য পাঁচশ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে নেট পাওয়া যাবে। দুই থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে অনেক ভাল মানের র্যাকেট পাওয়া যায়। খেলার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান কর্ক। যেটি ষাট থেকে একশত বিশ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। আর এই সবকিছুই পাওয়া যাবে শহর ও গ্রামের পাইকারি ও খুচরা স্পোটর্স মার্কেটে।
No comments