চারঘাটে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত
আব্দুল মতিন,চারঘাট:
স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন গণতন্ত্র চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং এ বয়স থেকেই এ নির্বাচন আমাদের গণতন্ত্রের প্রতি মূল্যবোধ সৃষ্টি হবে। ভবিষ্যত প্রজন্ম গণতন্ত্র চর্চায় বিশেষ অবদান রাখবে বলে আমি মনে করি বলে আশা প্রকাশ করেন চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশনার জ্যোতি রানী সরকার।
কৈশোরেই শিক্ষার্থীদের মাঝে গণতন্ত্রের চর্চা বাড়াতে চারঘাট স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসায় স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করে বিদ্যালয় গুলোতে।
শিক্ষার্থীদের মাঝে গণতন্ত্রচর্চা, অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধা, শিক্ষকদের সহায়তা, শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও ঝরে পড়ারোধসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই এ নির্বাচন বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মত প্রকাশ করেছেন চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাজমুল হক।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, এ বছরের স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচনে ১ জন ভোটারের জন্য ষষ্ঠ থেকে দশম প্রত্যেক শ্রেণিতে ১টি করে ৫টি এবং এর মধ্যে যে কোন ৩টি শ্রেণিতে সর্বোচ্চ ২টি করে মোট ৮টি ভোট দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। প্রত্যেক শ্রেণি থেকে ১ জন করে ৫ জন এবং সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত ৩ শ্রেণির ৩ জনসহ মোট ৮ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে স্টুডেন্ট কেবিনেট গঠিত হবে।
এদের মধ্যে কেবিনেটে একজন প্রধানমন্ত্রী এবং বাকিরা মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত থাকবে। স্টুডেন্ট কেবিনেট কাউন্সিলের কর্মপরিধির মধ্যে রয়েছে, পরিবেশ সংরক্ষণ, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী বিতরণ, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, পানিসম্পদ, বৃক্ষরোপণ ও বাগান তৈরি, বিভিন্ন দিবস পালন ও অনুষ্ঠান সম্পাদন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং আইসিটি। এ ছাড়াও নির্বাচিত কেবিনেট প্রতিমাসে অন্তত একটি সভা করবে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেবে। প্রতি ৬ মাস অন্তর সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে কেবিনেটের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন বলেন, কিশোর বয়স থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে গণতন্ত্রের চর্চা, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং ঝরে পড়ারোধে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
সরেজমিন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের নির্বাচন পরিদর্শন করে দেখা যায়, লম্বা লাইন দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে অপেক্ষমাণ ছিল ভোটাররা। পরিবেশটি ছিল পুরোপুরি নির্বাচনের। কোমলমতি শিক্ষার্থীরাই গণমাধ্যম কর্মীর ভূমিকা পালন করে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নির্বাচন কমিশন, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকরা নির্বাচনে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। এ যেন ছোট ছোট শিশুর গণতন্ত্র চর্চার হাতেখড়ির আয়োজন।
অনকেটা জাতীয় নির্বাচনের আদলে ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, ভোটকেন্দ্র্র, নির্বাচন কমিশনার, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্টের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা ভোটার হয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ভোট দেয়। ক্ষুদে প্রার্থীরাও কাতর হয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করে। ফলাফল প্রকাশের পর বিজয়ী প্রার্থী ও সর্মথকরা আনন্দে মেতে উঠে। পুরো মাঠ জুড়ে চলে আনন্দের হোলি খেলা। রঙে রঙে রঙ্গীন হয়ে হয়ে বিদ্যালয় চত্বর। গণতন্ত্রের এ জয়গানে মুকোরিত হবে দেশ এ প্রত্যাশা করেন বিজয়ী প্রার্থীরা।##
No comments