বসন্তের সাজপোশাক!
রাজশাহীর দর্পণ বিনোদন ডেস্ক :
উৎসব ছিল পরপর দুই দিন। শহরের অলিগলি সব ছেয়ে যেত হলুদ রঙে।
১ ফাল্গুন, খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জির হিসাবে ১৩ ফেব্রুয়ারি, বসন্তবরণের প্রথম দিন। পরদিনই রং পাল্টে যেত। হাতে লাল গোলাপ। পোশাকেও লাল-নীলের প্রাধান্য। ভালোবাসার দিন বলে কথা, ১৪ ফেব্রুয়ারি—ভ্যালেন্টাইনস ডে। এবার বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবস ঘটা করে পালন করা হবে এক দিনেই—১৪ ফেব্রুয়ারি। আনন্দ যখন দ্বিগুণ, সেটা স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশ পাবে সাজপোশাকে, অনুভবে।
মেকআপ নয়, বরং ফুলের রং-রূপই যেন মূল এ দিনে। নানা রঙের ফুলের ব্যবহারে সাজে আসে রঙিন ভাষা। সঙ্গে এবার যোগ হবে ভালোবাসার আলপনাও। চুলের সাজটা পয়লা ফাল্গুনে গুরুত্ব পায়। চুলের ফাঁকে ফাঁকে প্রিয়জন গুঁজে দেয় গোলাপ, জারবেরা, পমপম বা ইস্টার। কেউবা চুল খোলা রেখে মাথার ওপর পরে নেন ফুলে সাজানো হেডপিস। বেণি করা চুলে জড়িয়ে নেওয়া হয় রজনীগন্ধার সুবাস। এবার উৎসবের দিনটিতে পোশাকের রঙে দেখা যেতে পারে ভিন্নতা। কেউ প্রাধান্য দেবেন বাসন্তী রংকে কেউবা ফুলের ব্যবহারকে। ভালোবাসা আর ফুল দুটো একে অপরের পরিপূরক—পুরোনো এবং জানা কথা। ভালোবাসার দিনে ফুলের চাহিদা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। ফুল দিয়ে সাজতে চান বা উপহার হিসেবে কাউকে দিতে চান, কিনে রাখুন আগেভাগেই।
ঋতুরাজ বসন্ত প্রকৃতিতে ফিরে আসায় যে আনন্দ, তা পালন করা হয় অনেক দেশেই। মজার বিষয় হলো আমরা রঙিন পোশাকে বসন্ত বরণ করি, পাশের দেশ ভারতে সাদা পোশাকে বসন্ত বরণ হয়। কারণ, এদিন সবাই মেতে ওঠে রং খেলায়। রং ছোড়াছুড়ির মাধ্যমেই একে অন্যকে রাঙিয়ে তোলেন। বুলগেরিয়ায় মার্চের ১ তারিখে বসন্ত ফিরে আসার দিনটি পালন করা হয়। এ দিন সে দেশে পরিচিত গ্র্যান্ডমা মার্চ ডে নামে। লাল ও সাদা সুতায় তৈরি ছোট দুটি পুতুল বানিয়ে পরে থাকে প্রায় মাসজুড়ে, অনুষঙ্গ হিসেবে। বসন্তের প্রথম আভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলের গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় শুভকামনা হিসেবে। হানামি বা চেরি ব্লসম ফেস্টিভ্যাল জাপানের বসন্ত উৎসব। ফুলে ভরে থাকা চেরিগাছের নিচে সবাই জড়ো হয়। সঙ্গে থাকে খাওয়া, পানীয় আর গান।
এ বছরও সাজে থাকবে ফুলের ব্যবহার। চুলের সাজে ব্যান্ডানার ওপর লাগিয়ে নিতে পারেন পছন্দসই ফুল। ছোট আকারের ফুল পরতে যদিও সবাই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। বড় ফুল যদি ব্যান্ডানায় ঠিকঠাক লাগাতে পারেন, পরতে ও দেখতে ভালোই লাগবে। সারা দিন ঘুরে বেড়ানোর সময় পোশাকের আরামের বিষয়টি খেয়াল রাখুন। সুতির পোশাকে আরাম পাবেন। দিনের বেলায় এখন রোদের তাপ ভালোই আছে। শাড়ি, স্কার্ট, ফতুয়া কিংবা কামিজ—যেটাই পরুন—উজ্জ্বল রং, ফুলেল মোটিফ, ডোরাকাটা কিংবা পলকা আসতে পারে অনেক নকশায়। শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজটি রাখুন আধুনিক কাটের। শাড়ি পরার ধরনেই চলে আসে ভিন্নতা। ফুল ততটুকুই সাজে রাখুন, যতটুকু বহন করতে পারবেন। হাতে শুধু গাঁদা ফুলের মালা পেঁচিয়ে নিলেও এদিনের অনুভূতি পাবেন শতভাগ। হলুদ রঙের মায়া ও ঘ্রাণের মোহই অন্য রকম। সাজে লাগে না আর কিছু। বসন্ত উৎসবের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় চলে এসেছে।
No comments