বাঘায় চলতি মৌসুমে ধান কাটতে এলাকা ছাড়বে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক,গেছে প্রায় ৫হাজার
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
আগের বছরগুলোতে অনুমতি ছাড়াই ধান কাটতে এলাকার বাইরে ছুটতো কৃষি শ্রমিকরা। এবার করোনা ভাইরাসজনিত কারণে সরকারের দিক নির্দেশনা মেনেই ধান কাটতে বাইরে যাচ্ছেন হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক। রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে চলতি মৌসুমে বাইরে ধান কাটতে এলাকা ছাড়বে প্রায় ১৫ হাজার কৃষি শ্রমিক। কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত ৫দিনে বাঘা থেকে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসারের যৌথ স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র (অনুমতি) নিয়ে পাড়ি জমিয়েছে নিজ জেলার বাইরের বিভিন্ন জেলায়। নিজের খাদ্য যোগাড়ের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৫/২০ জনের একেকটি দল অনুমতি নিয়ে নিজ উপজেলার বাইরে ধান কাটতে যাচ্ছেন এসব শ্রমিকরা। তারা ধান কাটতে যাচ্ছেন নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। তবে বিগত বছরগুলোতে এ সময় শ্রমিকরা ট্রেন ও বাসের ছাদে যাতায়াত করতো বেশি। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের কারনে কোন যানবাহন চলাচল না করার ফলে নিজেরাই গাড়ি ভাড়া করে কিংবা বিকল্প পথে যাচ্ছেন ধান কাটতে। অনেকেই বাইসাইকেল,ভ্যানও সাথে নিয়েছেন ধান বহনের কাজে ব্যবহারের জন্য।
ছাতারি গ্রামের দলনেতা হাফিজুল ইসলাম জানান, এসময় এলাকায় তেমন কোন কাজ থাকেনা। প্রায় দুইমাস বেকার অবস্থায় ধারদেনা করে সংসার চালাতে গিয়ে অনেকেই ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে। ধান কাটার এ মৌসুমে খাদ্য সংগ্রহের জন্য বাইরে যান ধান কাটতে। একেকজন ১৫ থেকে ২০-২৫ মণ ধান নিয়ে বাড়ি ফেরেন। যা দিয়ে পরিবারের খাদ্যের অভাব দুর হয় এবং দেনা পাওনাও শোধ করতে পারেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রশাসনকে বলে দিয়েছেন,র্নিবিগ্নে আমরা যেন বাইরে ধান কাটতে যেতে পারি। স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যয়নপত্র নিয়েই বাইরে যাচ্ছি। বাউসা ইউনিয়নের দিঘা গ্রামের ১৫ জন শ্রমিকের দলনেতা পলান উদ্দীন জানান,তার নিজ ইউনিয়ন থেকে প্রায় ৪হাজার শ্রমিক বাইরে যাবে ধান কাটতে। ইতিমধ্যে প্রায় হাজারের বেশি শ্রমিক চলে গেছে।
সোমবার (২০-৪-২০২০) কথা হলে,উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, কৃষি প্রধান বাংলাদেশ বৈরি আবহাওতেও খাদ্য স্বয়ং স্মপুর্ন। কিন্ত দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জেলায় কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলেছেন। এর ধারাবাহিকতায় তার উপজেলার কৃষি শ্রমিককে জেলার বাইরে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সরকার প্রদত্ত সকল নির্দেশনা পালন সাপেক্ষ অন্য জেলার, উপজেলায় বোরো ধান কর্তনে যাওয়ার জন্য উপজেলার নির্বাহি অফিসার ও আমার যৌথ স্বাক্ষরে প্রত্যয়ন পত্র (অনুমতি) দেওয়া হয়েছে। তবে এরমধ্যে কেহ যদি করোনা আক্রান্ত এলাকা থেকে নিজ এলাকায় ফিরে আসে,তাদের নমুনা পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা বলেন, যেহেতু শ্রমিকরা এক দলে কাজ করবে। সেজন্য নিজেদের সাবধনতা অবলম্বন করে দুরত্ব বজায় রেখে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বেশি বেশি পানি পান ও ঘনঘন সাবান দিয়ে হাত ধৌত করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।##
No comments