দুশ্চিন্তায় চারঘাটের আম চাষীরা !
আব্দুল মতিন,চারঘাট:
এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই আম পাকা শুরু হবে। কিন্তু মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে আম নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন রাজশাহীর চারঘাটের চাষীরা।
ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতি ও ব্যবসায় ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া সরকার ঘোষিত ছুটিতে স্থবির সারা দেশ। ফলে থমকে আছে সবকিছুই। কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না। এতে বিশেষ করে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আম চাষীরাও এজন্য দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
চারঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ০৪ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এই উপজেলায় খাদ্যশস্যের পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হিসেবে আম প্রধান।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ উপজেলার আমের সুখ্যাতি সবচেয়ে বেশি।
উপজেলার আমের গাছগুলোতে এখন কাঁচা আমে পরিপূর্ণ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে যেটুকু ফলনের আশা করেছিলেন চাষিরা তাতেও পড়ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব। জেলায় লকডাউনের কারণে কৃষি উপকরণ, কীটনাশক ও শ্রমিক সংকট এরই মধ্যে প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে আমের যত্ন নিতে বেগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
এছাড়া মৌসুমের শুরু থেকেই ক্ষতিকর মিজ পোকা, হপার পোকা, গাছের পাতায় আক্রমণ শুরু হয়। কিন্তু দোকান-পাট বন্ধ থাকায় এখন সার-কীটনাশক পাওয়া কঠিন। ফলে আমের পূর্ণাঙ্গ পরিচর্যা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন আমের রাজধানী খ্যাত রাজশাহীর চাষিরা।
উপজেলার ভায়ালক্ষীপুর গ্রামের আম চাষী মিজানুর রহমান জানান, প্রায় ৫০ বিঘা আম বাগান লিজ নিয়ে চাষ করেছি। গাছে যথেষ্ট আম আছে। মহামারী করোনাভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আম পাড়া শুরু হওয়ার আগে এই মহামারী স্বাভাবিক না হলে অনেক ব্যবসায়ী ও চাষীদের পথে নামতে হবে। এ দিকে সামনে যে কোনো সময়ে কালবৈশাখী ঝড়ের একটি ভয়ও আছে।
পরানপুর গ্রামের আম চাষী শাহেদ শরীফ জানান, বিগত দুই বছর কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে সরকারিভাবে সময় বেঁধে আম পাড়া শুরু এবং বাজার মূল্য ভালো না পাওয়ায় আমের সঙ্গে সম্পৃক্তরা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চলতি মৌসুমে আমের উৎপাদন তুলনামূলক কম হয়েছে। ফলে বাজারমূল্য ভালো হওয়ার কথা। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সে আসা ভেস্তে যেতে বসেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুহাম্মদ মুনজুর রহমান বলেন, এক বছর গাছে ভালো আম হলে অন্য বছর কম হয়। পরপর দুই বছর প্রচুর পরিমাণ আম উৎপাদন হয়েছে। সেই তুলনায় এ বছরও গাছে আম ভাল রয়েছে। মহামারী করোনাভাইরাস কেটে গেলে আশা করছি চাষীরা ভালো দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
No comments