আম্পান: উপকূলের ২১ লাখ মানুষকে নেওয়া হচ্ছে আশ্রয় কেন্দ্রে
নিউজ ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে দেশের ২০ জেলার ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় আম্পানের তাণ্ডব থেকে রক্ষায় দেশের উপকূলীয় জেলার ২১ লাখ মানুষকে নিজ বসতবাড়ি থেকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। এর জন্য উপকূলে অবস্থিত পাঁচ হাজার সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রচুর পরিমাণে আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, সোমবার (১৮ মে) বিকাল নাগাদ আবহাওয়া অধিদফতর কর্তৃক সিগন্যাল ঘোষণার পরেই সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজ শুরু করবেন। এরজন্য ডিসিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো প্রস্তুত রয়েছে। তারা সেভাবেই কাজ করবে। একদিকে করোনা, অপরদিকে রমজান, এই দুই বিষয়কে মাথায় রেখেই এবার ঘূর্ণিঝড় কবলিত জেলার মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে এবং তাদের সেভাবেই রাখা হবে। যাতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা যায়।
তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মাথায় রেখেই এবার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় পর্যাপ্ত পরিমাণের হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার জন্য ডিসিদের বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে দেশের যে ২০ জেলার ওপর দিয়ে দমকা বাতাসসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ। একই সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলাসমূহে ঝড়োবাতাসসহ ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল জানিয়েছেন, আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি এখন যে গতিতে এগিয়ে আসছে তাতে এটি বুধবার সকাল নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তাই আগামীকাল বিকাল থেকে হয়তো উপকূলীয় এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি বাংলাদেশ ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তাই সরকারের নিজস্ব ৫ হাজার সাইক্লোন শেল্টারে সাধারণভাবে ২০ থেকে ২১ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারে। তবে এবার করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, এজন্য স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও ব্যবহার করছি। যাতে খুব বেশি গাদাগাদি না হয়। আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোকে ফ্যামিলি ওয়াইজ রাখার জন্য ডিসিদের বলা হয়েছে।
এদিকে সোমবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ভোর ৬টায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি ক্রমান্বয়ে ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে (মঙ্গলবার) শেষরাত থেকে ২০ মে (বুধবার) বিকাল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।##
No comments