বগুড়ায় দফায় দফায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ২০
বগুড়া: বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় রনক স্পিনিং মিল লিমিটেডের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের সীমাবাড়ী-রানীরহাট সড়কের শোলাকুড়ি এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার (১৩ মে) রাতের শিফটে পরিচয়পত্র ছাড়া কাজে যোগ দিতে যান রনক স্পিনিং মিলের দুই শ্রমিক শরীফুল ইসলাম ও আব্দুল মালেক। কিন্তু পরিচয়পত্র ছাড়া তাদের ভেতরে যেতে না দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনা জানাজানি হলে অন্যান্য শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং ওই দুজনকে মারপিটের প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে রাতেই কারখানা এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন। বিক্ষোভে বকেয়া বেতন প্রদানসহ আরও বেশ কিছু দাবি তোলা হয়।
বিক্ষোভের একপর্যায়ে শ্রমিকরা কারখানার প্রধান ফটক ও অফিস ভাঙচুর করে আগুন দেওয়ার চেষ্টা চালালে পুলিশ ঘটোনাস্থলে যায়। কিন্তু শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এর সূত্রেই উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়।
রাতভর সংঘর্ষ চললেও সকালের দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকরা আবারও সংগঠিত হয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। যথারীতি পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। ফলে আবারও পুলিশের ওপর চড়াও হন শ্রমিকরা।
পরে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। সব মিলিয়ে সময় গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ লাঠিচার্জের পাশাপাশি প্রায় ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে ৩ পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। বর্তমানে তারা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ স্থানীয় একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ঠেকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের সূচনা হয়। পরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) মো. গাজীউর রহমানের মধ্যস্থতায় কারখানার মালিক পক্ষ ও শ্রমিক নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে সার্বিক বিষয় ও শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও সম্পূর্ণ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি। ##
No comments