করোনাকালের আর্তনাদে বিষন্ন ঈদ,থমকে গেছে বাঘার ঐতিহাসিক ঈদ মেলা
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
এক করোনায় বিপর্যস্ত দেশ, এর পর পাশ কাটিয়ে গেছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। আর এই দুই দানবের অত্যাচারে যখন জনজীবন জর্জরিত, ঠিক তখন এসেছে রমজান শেষে ঈদ। কিন্তু খুশির ডালা সাজিয়ে নয়, এসেছে আনন্দ-আশঙ্কা-অনিশ্চয়তার অবিমিশ্রিত বার্তা নিয়ে। করোনার এই আকালের দিনে এবার এসেছে এক 'বিষণœ' ঈদ। করোনকালের আর্তনাদে ,প্রায় ৫শ বছরের ইতিহাসে রাজশাহীর ঐতিহাসিক বাঘায় এই প্রথম হয়রত শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলা(রহঃ) ও তদ্বীয় পুত্র হযরত শাহ আব্দুল হামিদ দানিশ মন্দ (রহঃ) এর পবিত্র ওরশ উপলক্ষে ঈদুল ফিতরের ঈদে অনুষ্টিত ঈদের মেলা,ওরশ কোনটাই হচ্ছেনা। শতশত বছরের মধ্যে এবারই বাঘার ঐতিহাসিক ঈদগাহে নেই জামাতের আয়োজন। লাখো মানুষের প্রাণের ছোয়ায় বাঘার ঐতিহাসিক ঈদ মেলা থেকে তাল পাতার বাঁশি আর মিঠাইসহ হরেক রকমের পণ্য কেনার সেই দৃশ্য এবার চোখে পড়বেনা। এদিকে সন্ধ্যার আবছায়ায় আকাশে বাঁকা চাঁদের হাসি দেখা গেছে ঠিকই, কিন্তু ঈদের চাঁদ দেখার আনন্দে এবার শিশুদের মিলিত আনন্দ কলরব শোনা যায়নি।
নিরানন্দ ঈদের সবচেয়ে বড় প্রমাণ ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রায় ক্রেতাশূন্যতা। গরিবের মধ্যেও গরিব যে, সেও ঈদে অন্তত একটা জামা কেনে। বড় শপিংমলে কমবেশি ভিড় থাকলেও নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের কেনাকাটার জায়গা হিসেবে পরিচিত অধিকাংশ মার্কেট খোলেনি। ফুটপাতের দোকান খাঁ খাঁ করছে। বিক্রেতারা বলছেন, কাজ নেই, রোজগার নেই, গরিব কী করে নতুন পোশাক কিনবে? করোনার আঘাতে কর্মহীন অগণিত মানুষ লড়ছে দুই বেলার আহার জোগাড়ে। ঈদ নিয়ে ভাবার সুযোগ তাদের কোথায়!
বিগত বছরগুলোতে বন্যা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, খরার বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে কিগত দিনে আরও কত ঈদ কাটিয়েছে মুসলমান সম্প্রদায়! ইসলামের দেড় হাজার বছরের বেশি ইতিহাসে এই প্রথম ঈদের উৎসব আনন্দহীনভাবে। বিশাল মাঠজুড়ে ঈদের জামাত হবে না। পরস্পরের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে যেগুলো জামাত হবে তাতে নামাজ শেষে কোলাকুলি হবে না। দূর থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জামাত করতে হবে। উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা বলেন,মসজিদেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামাত আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।##
No comments