সত্যিকারের যোদ্ধা চারঘাটের গ্রাম পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা যুদ্ধের আর এক অতন্দ্র প্রহরীর নাম গ্রাম পুলিশ। চারঘাটে করোনা প্রতিরোধে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিয়োজিত গ্রাম পুলিশ সদস্যরা।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে-গঞ্জে কাজ করছেন গ্রামপুলিশের সদস্যরা। তারা গ্রামের হাট-বাজার ও পথেঘাটে জনসমাগম এড়াতে মানুষকে সচেতন করছেন। লোকজনের সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিতকরণ, পাড়া-মহল্লায় রাতজেগে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন পাহারা দেওয়া ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণে সহায়তা ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে প্রশাসনকে সহযোগিতা করছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় গ্রামপুলিশ বিশেষ ভূমিকা পালন করায় প্রণোদনা হিসেবে দেশের ৪ হাজার ৫৬৯টি ইউনিয়ন পরিষদে নিয়োজিত প্রায় ৪৬ হাজার গ্রাম পুলিশের সহায়তায় ৬ কোটি টাকা বিশেষ অনুদান দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারিকৃত আদেশ অনুসারে, চারঘাটের প্রত্যেক গ্রাম পুলিশ (দফাদার ও মহল্লাদার) ১ হাজার ৩০০ টাকা করে পাবেন।
উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের দফাদার জহুরুল হক বলেন, আমরা বেতন কিংবা সরকারি প্রণোদনা খুব বেশি পাইনা। তবুও সরকারি প্রতিটা নির্দেশ বাস্তবায়নে সব সময়ই মাঠে রয়েছি। করোনা আতঙ্কের শুরু থেকেই নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছি। টাকা পয়সার জন্য নয়,নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে কাজ করি আমরা।
অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সমিত কুমার কুন্ডু বলেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজপি) এর নির্দেশে আমরা পুলিশ বাহিনী সদা সর্বদা মাঠে রয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি এখন করোনা পরিস্থিতি এনে দিয়েছে আরেক ভিন্ন বাস্তবতা। সেটি মোকাবেলায় সার্বিকভাবে দয়িত্ব পালন করছে পুলিশ। এর পাশাপশি উপজেলার সকল গ্রাম পুলিশও নির্দেশনা মেনে দায়িত্ব পালনে ভুমিকা রাখছে। এ জন্য আমার পক্ষ থেকে চারঘাটের সকল গ্রাম পুলিশকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
গ্রাম পুলিশের কার্যক্রম এবং সার্বিক বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা সামিরা বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা। কোয়ারেন্টিনের নোটিশ টাঙানো, হাট বাজারের সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত করা, সরকারী অনুদানের খাদ্য সামগ্রী উপকারভোগীদের বাড়িতে পৌঁছানো এবং বিভিন্ন সরকারী সাহায্যের তালিকা তৈরিতে গ্রাম পুলিশ যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে কম বেতনে অনেক বেশি কাজ করা মানুষটিই হলো গ্রাম পুলিশ। তারা অর্থ কিংবা কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধার কথা না ভেবেই করোনা মোকাবেলায় মাঠে রয়েছে। এ জন্য আমাদেরও উচিত তাদের এখন মূল্যায়ন করা। সত্যিকারের করোনা যোদ্ধা হিসাবে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করায় আমার পক্ষ থেকে চারঘাট উপজেলার গ্রাম পুলিশের সকল সদস্যকে অংসখ্য ধন্যবাদ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরো বলেন, তাদের ঝুঁকি এবং নিরাপত্তার কথা ভেবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটা গ্রাম পুলিশকে ২ সেট পোশাক, সোয়েটার, জুতা,মোজা, ছাতা,সাইড ব্যাগ, বাঁশি, লাঠি,নেমপ্লেট,ব্যাচসহ পর্যাপ্ত পরিমান মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার সরবারহ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটা গ্রাম পুলিশকে খুব দ্রুত পিপিই প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।##
No comments