Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে, ৬৬ দিন পর সব খুলছে আজ-rajshahirdorpon24

    করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে, ৬৬ দিন পর সব খুলছে আজ-https://www.rajshahirdorpon24.com
    নিউজ ডেস্ক:
    করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে ৬৬ দিন ছুটি শেষে
     আজ রোববার থেকে ফের সরব হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ। সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিল্পকারখানা খুলছে আজ। এদিন পুরোদমে শুরু হচ্ছে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম। চালু হচ্ছে ব্যাংকের স্বাভাবিক লেনদেন। পাশাপাশি সারা দেশে চলবে ট্রেন ও লঞ্চও।

    এছাড়া কাল সোমবার থেকে বাস ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল শুরু হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস ও যান চলাচল করতে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগের ভাড়ায় ট্রেনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বাসে অর্ধেক আসনে যাত্রী বহনের অনুমতি দিয়ে ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বিআরটিএ। লঞ্চেও সার্ভে সনদে নির্ধারিত যাত্রীর বেশি বহনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। তবে এসব পদক্ষেপ নেয়ার পরও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের আশঙ্কা- ওই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যর্থ হলে করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবে।

    এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ আশঙ্কা থেকেই আমরা প্রত্যেকের মুখে মাস্ক ব্যবহার ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছি। কেউ মাস্ক ব্যবহার না করলে তাকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে-এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হবে। এছাড়া এ সংক্রান্ত আইনও রয়েছে। তিনি বলেন, সংক্রমণ রোধে আমাদের আহ্বান থাকবে- অপ্রয়োজনে কেউ যেন বাসার বাইরে বের না হন। যারা অতি প্রয়োজনে বের হবেন, তারা যেন দ্রুত কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে যান।

    জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনায় না নিয়ে ৩১ মে থেকে সারা দেশের সব অফিস, দোকানপাট, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হল। এই সিদ্ধান্তটি আমাদের জন্য আত্মঘাতী হতে পারে। কারণ, আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সেবা খাতগুলোয় মানুষের শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ হবে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অফিস খোলা হয়েছে- এমন যুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে মৃত্যুহার কম হলেও প্রচুর মানুষ অসুস্থ হবে। একজন পজিটিভ হলে তাকে আপনি ২১ দিনের ছুটি দিতে বাধ্য। তার সংস্পর্শে আসা অন্যদের ছুটি দিতে হবে। তারা হয়তো মারা যাবেন না, কিন্তু তাদের কাছ থেকে সার্ভিসও তো নিতে পারবেন না। তাহলে কীভাবে অর্থনীতির চাকা সচল থাকবে?

    দেশে গত ৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্তের পর ২৬ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। কয়েক দফায় তা বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত ৬৬ দিন ছুটি আজ রোববার শেষ হল। এটিই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা ছুটি। এ ছুটি অবসানের ফলে আজ (৩১ মে) থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলছে। আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত অফিস ও গণপরিবহনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে পরিচালিত হবে এবং কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে, সেই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অফিস আদেশ জারি করে।

    ওই আদেশে বলা হয়েছে, ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিসগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা নারী কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। এ সময়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে জানানো হয়েছে।

    অফিস-অধিদফতর : টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রোববার সচিবালয় ও অধিদফতরগুলো খুলছে। সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ থাকবে। প্রত্যেকের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। এছাড়া মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দফতরগুলো নিজ নিজ উদ্যোগে জিবাণুনাশক ব্যবস্থা নিয়েছে। সেখানে প্রত্যেকের হাতে জিবাণুনাশক দেয়া হবে। বেশকিছু অধিদফতর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও প্রবেশপথে জিবাণুনাশক ট্যানেল বসিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, অফিসে যাতায়াত ও কর্মক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করা কঠিন হবে। তারা বলেন, সাধারণ সময়ে সরকারি বাসে গাদাগাদি করে যাতায়াত করেছি। করোনার সময়ে নতুন বাস সংযোজন করা হয়নি। ফলে আগের মতোই যাতায়াত করতে হবে। এছাড়া সেবাগ্রহীতারা সচেতন না হলে তাদের থেকেও সংক্রমণ হতে পারে বলে শঙ্কা তাদের।

    অর্থনৈতিক কার্যক্রম : করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ রোববার থেকে সীমিত আকারে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু হচ্ছে। এর মধ্যে রফতানিমুখী শিল্পের সব অফিস ও কারখানা রয়েছে। একই সঙ্গে উৎপাদন খাতের সব শিল্পকারখানাও আজ থেকে খোলা হবে। যেসব কারখানায় রফতানির কার্যাদেশ রয়েছে, সেগুলো চাহিদা অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টাই খোলা রাখা যাবে। অন্যগুলো চাহিদা অনুযায়ী খোলা রাখতে পারবে। তবে জরুরি পণ্য উৎপাদন ও সেবার সঙ্গে জড়িত শিল্পকারখানা ও অফিস সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। এছাড়াও পণ্য পরিবহন, বিপণন ব্যবস্থায়ও স্বাভাবিক কার্যক্রম আজ থেকে চালু হচ্ছে।

    আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের স্বার্থে সব সমুদ্র, বিমান ও স্থলবন্দর সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। এসব এলাকায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শাখা সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বক্ষণিকভাবে খোলা রাখা যাবে। এছাড়া দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ খুলছে শেয়ারবাজার। লেনদেন হবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। শেয়ারবাজার লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্রোকার, ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোও খোলা থাকবে। ব্যাংকের লেনদেন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে। তবে করোনাভাইরাসের মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় লেনদেন আড়াইটা পর্যন্ত চলবে। নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ক্ষুদ্রঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও আজ থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করবে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল করতে হাটবাজারে কার্যক্রমও আজ থেকে সীমিত আকারে চালু হবে। একই সঙ্গে গ্রামীণ অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউসগুলোয় সীমিত আকারে কার্যক্রম চলবে।

    তবে কোনো এলাকায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলে বা লকডাউন করা হলে ওই এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিচালনা করতে হবে। তবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে এখনই পর্যটন খাত চালু করা হচ্ছে না।

    বাস চলাচল : সারা দেশে বাসের ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রতিটি বাসে আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী বহন করা হবে। বাড়তি ভাড়া ঢাকাসহ সারা দেশে করোনা সংক্রমণ সময়ের জন্য প্রয়োজ্য হবে। শনিবার বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মো. ইউছুব আলী মোল্লার সভাপতিত্বে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিনই ওই সুপারিশ গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সোমবার থেকে বাস চলাচল শুরু হবে। বিআরটিএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

    আরও জানা যায়, সাধারণ ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাসের দাম, ব্যাংক ঋণ, সুদ, খরচ, যাত্রী সংখ্যাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। শুধু যাত্রী সংখ্যা বিবেচনা করে ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও মালিক নেতারা ভাড়া শতভাগ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে ৪০ আসনের বাসে ২০ জন যাত্রী নেয়া হবে। অর্থাৎ পাশাপাশি দুটি আসনে একজন করে যাত্রী বসতে পারবেন। অপরটি খালি থাকবে। সড়কে গণপরিবহন চালাচলের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ১৩টি কারিগরি নির্দেশনা দিয়েছে তা অনুসরণ করতে মালিক ও শ্রমিকদের বলা হয়েছে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মো. ইউছুব আলী মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রতিটি বাসে আসনের অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী বহন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে বিদ্যমান ভাড়ার সঙ্গে ৮০ শতাংশ ভাড়া যুক্ত হবে। বাসের প্রত্যেক ট্রিপ শেষে জিবাণুনাশক ছিটাতে হবে। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হলে আইন অনুযায়ী সাজা পেতে হবে। এজন্য ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সমন্বয়ে টিম রাস্তায় থাকবে।

    বিদ্যমান ভাড়ায় ট্রেন চলাচল : বিদ্যমান ভাড়ায় আজ থেকে ৮ জোড়া (১৬টি) আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। তিনদিন পর অর্থাৎ ৩ জুনে আরও ৯ জোড়া (১৮টি) ট্রেন চালু হবে। সাধারণ যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি ও রেলওয়ের নির্দেশনা মেনে ট্রেনে ভ্রমণ করে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। প্রথমে ক পর্বে ৮ এবং খ পর্বে ৯ জোড়া ট্রেন পরিচালনার বিষয়ে শনিবার দুপুরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন। এতে তিনি বলেন, যাত্রীদের ভিড় এড়াতে রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশন, গাজীপুরের জয়দেবপুর ও নরসিংদী স্টেশনে আপাতত কোনো ট্রেন থামবে না। ১৫ জুন পর্যন্ত সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি ও রেলওয়ের ১৬টি বিশেষ নির্দেশনা মেনে যাত্রীরা ট্রেনে ভ্রমণ করবে- কোনো অবস্থাতেই বিনা টিকিটে যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।##

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728