Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    পুকুর খননে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এবার বিএমডিএ ব্যয় করছে ১২৮ কোটি টাকা||rajshahirdorpon24

    পুকুর খননে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এবার বিএমডিএ ব্যয় করছে ১২৮ কোটি টাকা||rajshahirdorpon24

    নিউজ ডেস্ক:
    রাজশাহী অঞ্চলে একের পর এক পুকুর খননের হিড়িকে প্রশাসন যখন হিমশিম খাচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকে পুকুর খননে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ঠিক তখনোই বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকশ পুকুর খননের জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে। এর বাইরে খাল খননের নামে আবারো হরিলুটের প্রকল্প হিসেবে ৪২৫ কোটি টাকার দুটি বৃহৎ প্রকল্পও বাস্তবায়ন করতে কাজ শুরু করেছে। হরিলুটের এসব প্রকল্পে এরই মধ্যে তিনজন প্রকল্প পরিচালকসহ মোট ১৬ জনকে পদায়ন করা হয়েছে।

    বিএমডিএ’র এসব কর্মচারীদের অনেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে নানা অভিযোগ। আর এসব নিয়ে বিএমডিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ফের অস্থিতরতা দেখো দিয়েছে চরম।
    বিএমডিএ সূত্র মতে, সম্প্রতি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় খাল খননের জন্য রংপুরের প্রায় ২৫০ কোটি, নাটোরের প্রায় ১৭৫ কোটি টাকার এবং বিএমডিএ’র জোনের বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খননের জন্য ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
    এই তিনটি প্রকল্পের জন্য এরই মধ্যে তিনজনকে প্রকল্প পরিচালকসহ মোট ১৬ জনকে পদায়ন করা হয় চলতি দায়িত্ব দিয়ে।

    সর্বশেষ গত ২৩ জুন পদায়ন করা হয় ১৩ জনেক। এই ১৩ জন প্রকল্প সহকারী হিসেবে কাজ করবেন। যাদের অনেকের বিরুদ্ধে এর আগে রয়েছে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ। ফলে এ নিয়ে বিএমডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরী হয়েছে। সিল্কসিটিনিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএমডিএর একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

    তাদের দাবি, এসব উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের আশ্রয় নিতেই তিন প্রকল্প পরিচালক নিজেদের পছন্দের লোকজনকে পদায়ন করেছেন। এর মধ্যে রংপুরের প্রকল্পের জন্য ৬জনকে এবং নটোরের প্রকল্পের জন্য দুইজনকে পুকুর খননের জন্য ৫ জনকে পদায়ন করা হয়। যাদের অনেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে নানা অভিযোগ।

    বিএমডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, রাজশাহী অঞ্চলজুড়ে ফসলি জমি কেটে হাজার হাজার পুকুর খনন হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। ফলে পুকুর খনন বন্ধ করতে এবং ফসলি জমি নষ্ট করার হাত থেকে রক্ষা করতে এরই মধ্যে ২০১৭ সালে উচ্চ আদালত থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফলে উচ্চ আদালতের অনুমতির পাশাপাশি ছাড়া রাজশাহী অঞ্চলে এখন পুকুর খনন করা যায় না। এরই মধ্যে সেই পুকুর খননের নামের সরকারি প্রায় ১২৮ কোটি টাকা ব্যয় করতে বৃহৎ একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিএমডিএ। যার এই মুহূর্তে কোনোই প্রয়োজন নাই। কারণ এই সময়ে রাজশাহী অঞ্চলে হাজার হাজার পুকুর গড়ে উঠেছে ব্যক্তি মালিকানায়। পুকুর খনন রোধে এমনিতেই প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

    এই প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে বিএমডিএসহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৫ কর্মকর্তা কোটি টাকা খরচ করে বিদেশ ভ্রমণও করে এসেছেন। এই নিয়ে কালের কণ্ঠে একটি সংবাদও প্রকাশ হয়েছে এর আগে।

    এদিকে নাটোরের প্রায় ১৭৫ কোটি টাকার খাল খনন প্রকল্পে পরিচালক করা হয়েছে সুমন্ত কুমার বসাককে। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ৪ বছর। সুমন্ত কুমার বসাকের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও প্রকল্প পরিচালকের চাকরি কমপক্ষে ৬ মাস থাকার নিয়ম আছে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী তিনি প্রকল্প পরিচালক হতে পারেন না। এছাড়া তার এমন কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তারপরেও এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুমন্ত বসাককে প্রকল্প পরিচালক করা হয়েছে।

    নিয়ম ভেঙে শুধু সুমন্ত বসাক প্রকল্প পরিচালক হয়েছেন এমন নয়। দরপত্রেও অনিয়মের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। খাল খননের জন্য সর্বনি¤œ দরদাতাকে কাজটি দেওয়া হয়নি। ১০ ভাগ কমিশন নিয়ে এক রাজনৈতিক নেতার ভাগিনাকে কাজটি দেওয়া হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কাজটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শুরু না করেই ইতিমধ্যে অর্ধশত কোটি টাকা খরচ করে ফেলা হয়েছে। বছরে ৫ কিলোমিটার হারে খাল খননের যে কথা ছিল, সেটি হয়নি। ইতিমধ্যে বছর শেষ হয়েছে।

    এর বাইরে প্রায় ৪২৫ কাটা টাকা ব্যয়ে যে খাল খনন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে সেটি নিয়েও রয়েছে নানা কথা। কারণ বিএমডিএ’র অধিনে এখন পর্যন্ত যেসব খাল খনন করা হয়েছে, সেগুলো দুই বছরও যেতে পারেনি। আবারো ভরাট হয়ে আগের অবস্থায় পরিণত হয়েছে। ফলে এই টাকাও জলে যাবে বলেই দাবি করেছেন বিএমডিএ’র কর্মকর্তারাই।

    আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই খাল খননের নামে পাড় কেটে টাকা তোছরুপের অভিযোগ তুলেছেন। তার পরেও বিতর্কিত এ প্রকল্পের পেছনেও কাড়ি কাড়ি টাকা ঢালছে বিএমডিএ।

    প্রসঙ্গত, এর আগে খাল খননে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রশিদকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে আগের পদে ন্যাস্ত করা হয়। এরই মধ্যে আবারো বিপুল অংকের সরকারি অর্থ খরচ করে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুটপাট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে বেশি। আর এ কাজ করতে এরই মধ্যে এই তিনটি বৃহৎ প্রকল্পে বিএমডিএ’র যেসব কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই রেয়ছেন বিতর্কিত ও নানা অভিযোগে অভিযুক্ত।

    বিএমডিএ সূত্র মতে, নাটোর জেলার সেচ স¤প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সুমন্ত কুমার বসাককে বিএমডিএ’র গ্রামীন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে কর্মরত থাকা অবস্থায় অনিয়মের অভিযোগে তাকে বদলি করা হয়। ২০১৭ সালে পাবনার এক সংসদ সদস্যের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী থেকে জয়পুরহাট জেলায় বদলি করা হয় তাকে। পরবর্তিতে গত বছরের অক্টোবরে তাকে আবারও রাজশাহী সদরে বদলি করা হয়।

    অভিযোগ উঠেছে, তিনটি বৃহৎ প্রকল্প পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে তিনজনকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়ে। এছাড়াও এরই মধ্যে তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য যেসব নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীকে বদলি করা হয়েছে তাদের অনেকেই বিরুদ্ধেই রয়েছে নানা অভিযোগ। এর মধ্যে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী হলেন শান্তি কমিটির সভাপতির ছেলে। তার এক ভাই এখনো বিএনপি করেন।

    তবে সুমন্ত বসাক সাংবাদিকদের জানান, নিয়ম মেনে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এনিয়ে কোনো ঠিকাদার তার বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। প্রক্রিয়ায় ত্রæটি থাকলে কেউ না কেউ অভিযোগ করতো। আর প্রকল্প পরিচালক হওয়া প্রসঙ্গে তিনি নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

    তবে এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক শ্যাম কিশোর রায় সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। তবে কাউকে কোনো ধরনের অনিয়মের সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। বিএমডিএ’র সমস্ত কাজে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে করা হবে।’

    সূত্র :silkcitynews

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728