Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    চারঘাটে অনলাইনে জমজমাট আমের বেচাকেনা ||rajshahirdorpon24

    চারঘাটে অনলাইনে জমজমাট আমের বেচাকেনা ||rajshahirdorpon24

    ওবায়দুর রহমান রিগেন, চারঘাট:
    করোনা দুর্যোগে মানুষের হাতে হাতে আম পৌঁছে দিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন প্লাটফর্মে আমের বিকিকিনি। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাজশাহীর চারঘাট অঞ্চলের অনেক তরুণ উদ্যোক্তা অনলাইনের মাধ্যমে আম বিক্রি শুরু করেছেন।

    এতে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে চাষিরা পাচ্ছেন ফসলের ন্যায্য মূল্য। আর ভোক্তারা অল্প সময়ের মধ্যে পাচ্ছেন চাহিদা অনুযায়ী ফরমালিনমুক্ত সুস্বাদু ও পরিচ্ছন্ন আম।

    ঢ়াকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশেনা করেন সোহেল মাহবুব। করোনা মহামারী শুরুর পর থেকেই চারঘাটের নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। হুট করেই শখের বসেই শুরু করেন আমের ব্যবসা। অনলাইনের মাধ্যমে ও পরিচিতদের কাছে এ পর্যন্ত তিনি ৫০ মণ আম সরবরাহ করেছেন।

    আরো পড়ুন :রাজশাহীতে চিকিৎসক, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আরও ২৫ জনের করোনা শনাক্ত

    সোহেল মাহবুব জানান, কিছুদিন আগেও আমার অবস্থা ছিল যে, কেউ যদি লখনা আম নিয়ে এসে বলতো এটা হিমসাগর, আমি তা-ই বিশ্বাস করতাম। আমের কোনো জাত চিনতাম না। কিন্তু সেই আমি হুট করে একদিন ফেসবুকে শখের বসে অনলাইনে আম বেচাকেনার স্ট্যাটাস দিয়ে ফেলি। তারপর থেকেই আমার ফেসবুক ফলোয়ার ও বন্ধুরা আমাকে মেসেঞ্জারে নক করে আমের অর্ডার দেন।

    ”ব্যাপক সাড়া পাই। তখন আমি বাগান ঘুরে ঘুরে দেখেশুনে গাছের আম কিনে নিই। গাছ থেকে আম কিনে সেখানেই প্যাকিং করে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠাই।”

    শুধু সোহেল মাহবুব না, চারঘাট-বাঘার অনেক তরুণ উদ্যোক্তা আম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অনলাইনে অর্ডার নিয়ে তারা বাগান থেকে আম পেড়ে, সেখানেই প্যাকিং করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পৌঁছে দেন ভোক্তার কাছে। হাটে বাজারে আম বেচাকেনার ফলে কয়েকহাত ঘুরে সেই আম পৌঁছাতো ভোক্তাদের কাছে। অনলাইনে কেনাবেচার জন্য এখন তা অনেকটাই কমে গেছে।

    চারঘাটের সরদহ সরকারি কলেজের প্রভাষক ওবাইদুর রহমান রিগেন। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তিনিও শখের বসে শুরু করেছেন আমের ব্যবসা। অনলাইনেই বিক্রি করছেন বেশিরভাগ আম। ‘রাজশাহীর আম’ নামে তার একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থানে এ পর্যন্ত তিনি অনলাইনে ১৬০ মণ গোপালভোগ ও খিরসাপাত আম বিক্রি করেছেন।

    ওবাইদুর রহমান জানান, আমাদের নিজস্ব কিছু আমের বাগান রয়েছে। তারপরও খিরসাপাত আর ল্যাংড়ার অনেকগুলো গাছের আম কিনে নিয়েছি। এ ছাড়া ফজলি, আম্রপালি, বারি-৪ আর আশ্বিনা আম রয়েছে পর্যাপ্ত।

    তিনি বলেন, স্থানীয় চাষীদের কাছ থেকেও আম কিনে থাকি। ফলে চাষীরাও লাভবান হন। কারণ চাষীদের হাটে আম নিয়ে গেলে খাজনা দিতে হয়। আবার দামও কম পান। আড়তদাররা আবার সেই আম বিক্রি করেন আম ব্যবসায়ীদের কাছে। সেই আম কয়েক হাত ঘুরে যেত ভোক্তার কাছে। ফলে বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীদের আমে ফরমালিন দিতে হয়। অনলাইনে বিক্রির ফলে সরাসরি বাগান থেকে আম প্যাকেট হয়ে ভোক্তার কাছে পৌঁছে যায়। ফলে টাটকা ফরমালিনমুক্ত আম পেয়ে যান ভোক্তারা।

    ওবাইদুর রহমান জানান, শুধু চারঘাটেই ২০টির মতো অনলাইনে আম বেচাকেনার ফেসবুক পেজ রয়েছে। যার মধ্যে কিছু পেজ থেকে সরাসরি আম বাগান থেকে লাইভ করে ক্রেতাদের গাছ থেকে আম পাড়া ও প্যাকেটিং করে দেখানো হয়। অনেকে ফেসবুক মেসেঞ্জার, ইমো ও হোয়াটসঅ্যাপে লাইভ করেন। ফলে ক্রেতারা টাটকা আম পান।

    পরানপুর গ্রামের আমচাষী শরীফুল ইসলাম জানান, আমার মোটামুটি ১০০টির মতো আমের গাছ রয়েছে। আগে আম পেড়ে বানেশ্বর হাটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতাম। এখন অনলাইন ব্যবসায়ীদের কাছে বাগানেই আম বিক্রি করি।

    ”দাম ভালো পাওয়া যায়। আবার হাটের খাজনা দিতে হয় না। বাগান থেকে আম পেড়ে হাটে নিয়ে যাওয়ার পরিবহন খরচও বেচে যায়” বললেন তিনি।

    চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুনজুর রহমান জানান, এ বছর আম্পানে চারঘাটে ১০ শতাংশ আম ঝরে গেলেও আমের দাম ভালো রয়েছে। ফলে আম ঝরে যাওয়ার পরও কৃষকরা খুব একটা লোকসানে পড়বেন না। বরং লাভবান হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি আছে। অনলাইনে মাধ্যমে আমের ব্যবসা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বলে জানান তিনি।##

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728