যে কারণে ছেড়ে দিতে হলো মায়ের হত্যাকারী পবার শিশুটিকে ||rajshahirdorpon24
![]() |
যে কারণে ছেড়ে দিতে হলো মায়ের হত্যাকারী পবার শিশুটিকে ||rajshahirdorpon24 |
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর পবা উপজেলার দামকুড়া থানার বেড়পাড়া পূর্বপাড়ায় ৫ টাকা চেয়ে না পেয়ে মায়ের সাত বছরের শিশুর হাসুয়ার কোপে প্রাণ হারিয়েছেন মা। দেশের খুনের ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা বলেই মনে করছেন অনেকে। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকের এ ঘটনাটির পর সামাজিক গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হতে থাকে। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন কোন দিকে যাচ্ছে দেশ?
এদিকে দেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম ঘটনা যে, মাকে হত্যার পরও আসামিকে তাৎক্ষণিক ধরে আবার ছেড়ে দিতে হলো পুলিশকে। কারণ শিশু আইনে ৯ বছরের নিচে কোনো শিশুর অপরাধকে অপরাধ বলে গণ্য হবে না। এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা বলে ধরে নিতে হবে। ফলে পুলিশ মাকে হত্যার ঘটনায় শিশুটি ফাহিমকে (৭) ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। শিশুটিকে তার বাবার জিম্মায় দিতে হয়েছে।
নগরীর দামকুড়া থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, শিশু আইনের ৮২ ধারা অনুযায়ী ৯ বছরের নিচের কোনো শিশু কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করলেও সেটি অপরাধকে অপরাধ বলে গণ্য হবে না। ফলে শিশুটিকে আমরা তার বাবা রবিউল ইসলামের জিম্মায় দিব। ঘটনার পরে শিশুটিকে তার নানীর কাছে রাখা হয়। নানীর সঙ্গে শিশুটিকে থানায়ও আনা হয়। তবে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ওসি মাজহারুল ইসলাম আরও জানান, ঘটনার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরাও ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারাও পরিস্কার হয়েছেন শিশুটি বুঝতে না পেরে এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। নিহতে মা তোহুরা বেগমের (২৮) মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
পরে বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের লোকজন নিয়ে গিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করেন।
এদিকে পারিবারিক সূত্র জানা গেছে, গতকাল সকালে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই শিশুটি বাড়িতেই খেলছিল। একপর্যায়ে সে তার মা’র কাছে পাড়ার দোকান থেকে শিশুখাদ্য কেনার জন্য ৫ টাকা দাবি করে। তবে ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে মা তোহুরা শিশুটিকে সরে যেতে বলেন।
![]() |
www.Rajshahirdorpon24.com |
এরপর শিশুটি ঘর থেকে একটি ধারালো হাসুয়া নিয়ে এসে তার মায়ের বুকে কোপ দেয়। এতে মারাত্মক আহত হন মা তোহুরা। এদিকে মায়ের রক্ত গড়াগড়ি যেতে দেখে শিশুটি আতঙ্কে পালিয়ে পাশের গ্রাম দুর্গাপুরে তার ফুফুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
পরে পরিবারের লোকজন দ্রুত মা তোহরুকে নিয়ে রামেক হাসপাতালে আসে। তবে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নিহত তোহুরার স্বামী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, ‘যা বলার ভাষা নাই। না বিচার চাইতে পারছি, না মেনে নিতে পারছি। এখন ছেলেটিও হয়তো সারাজীবন এই কলঙ্ক নিয়ে বড় হবে। সে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারবে কিনা সেটি নিয়েও থেকে গেলো শঙ্কা।’##
No comments