সৈয়দা সামিরা, চারঘাটের মানবিক ইউএনও ||rajshahirdorpon24
সৈয়দা সামিরা, চারঘাটের মানবিক ইউএনও ||rajshahirdorpon24 |
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোটা এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে এখন অনুকরণীয় মানবিক কর্মকর্তা। এখানে যোগদানের পর থেকেই তিনি সাধারণ মানুষের সেবায় কাজ করে চলেছেন।
জনমানুষের স্বার্থে লড়ে যাচ্ছেন যাবতীয় অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে। করোনাভাইরাসের এই মহামারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ঘরে তিন বছরের সন্তান রেখে মাঠপর্যায়ে কর্মহীন, অসহায়-হতদরিদ্র মানুষের পাশে থাকছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারঘাটের ইউএনও হিসেবে এ বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেন সৈয়দা সামিরা। আর দায়িত্ব নিয়েই তিনি উপজেলার মানুষের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেন। বাল্যবিয়ে ও যৌতুকপ্রথা বন্ধ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, সরকারি জমি উদ্ধার, চাঁদাবাজি বন্ধ এবং মাদক নির্মূলে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করেছেন। আর জনহিতকর এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে তিনি এলাকার মানুষের অতি কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউএনও সৈয়দা সামিরা উপজেলায় যোগদানের পরে উপজেলা প্রাঙ্গণে হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, যা উপজেলার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি রোধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে নিয়ে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছেন এই কর্মকর্তা।
আরো জানা যায়, ইউএনও সৈয়দা সামিরা চলমান করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের লক্ষে উপজেলার গ্রামগুলোতে লোকজনদের সচেতন করার জন্য নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ। আবার করোনা আক্রান্ত লকডাউন করা পরিবার বা এলাকাগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে নিজেই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন।
প্রায় প্রতিদিনই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা খাদ্যসামগ্রী সঠিকভাবে বিতরণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে দুস্থ অসহায় কর্মহীনদের হাতে হাতে তুলে দিয়েছেন। পাশাপাশি উপজেলার কোনো অসহায় লোকজন নির্দিষ্ট নম্বরে কল দিলে নিজেই খাদ্য সহায়তা নিয়ে হাজির হয়েছেন।
করোনাকালে ব্যবসায়ীরা যাতে পণ্যের দাম বেশি নিতে না পারেন সে জন্য তিনি উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখেন প্রতিনিয়ত। করোনার বিস্তার রোধে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে প্রতিদিন মাঠে থেকেছেন। লাশ দাফন, করোনা আক্রান্ত চিকিৎসার পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষার দিকেও নজর রাখছেন।
করোনা ভাইরাস শুরুর দিকে ঘটে যাওয়া নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যে নিয়ে দাম বৃদ্ধির গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে বাজার মনিটরিং করা, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল বিক্রিতে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ সহ নানা পজেটিভ কর্মকান্ডে উপজেলা জুড়ে মানবিক ইউএনও হিসাবে পরিচিত পেয়েছেন সৈয়দা সামিরা।
তাছাড়া ঘুর্ণিঝড় আস্পান মোকাবেলাসহ ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে তাৎক্ষনিক সরেজমিনে আম চাষীসহ ক্ষতিগ্রস্থদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন।
ইউএনও সৈয়দা সামিরা করোনা মোকাবেলার পাশাপাশি উপজেলায় বিভিন্ন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়িয়েছেন। প্রভাবশালীদের বাধা উপেক্ষা করে তিনি পদ্মা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করেছেন। চারঘাটের বড়াল নদীর অবৈধ বাধ দখলমুক্ত হয় তাঁর নেতৃত্বে।
ইউএনও সৈয়দা সামিরা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি উদ্যোগ সফল করতে আমি অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাব। মানবসেবার ব্রত নিয়েই চাকরিতে এসেছি। আমি এ উপজেলাবাসীর জন্য যেটা করছি, তা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকেই করছি।##
No comments