বড়াল নদীকে গিলে খাচ্ছে চারঘাট পৌর কতৃপক্ষ||rajshahirdorpon24
![]() |
বড়াল নদীকে গিলে খাচ্ছে চারঘাট পৌর কতৃপক্ষ||rajshahirdorpon24 |
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর চারঘাট স্লুইস গেট সংলগ্ন এলাকায় নদী দখল করে পাবলিক টয়লেট ও রাস্তা নির্মাণ করছে চারঘাট পৌর কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসন কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো ধরনের বন্দোবস্ত কিংবা অনুমতি ছাড়াই এই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।
পৌরবাসীর সার্বিক সুযোগ সুবিধা এবং অবকাঠমোর উন্নয়নে প্রায় ১৫২ কোটি টাকার কাজের প্রস্তবনা আছে। ইউজিআইআইপি-৩ (তৃতীয় নগরায়ন) এর প্রায় ৩৪ কোটি টাকার কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। যদিও এ কাজ সম্পূর্ণ করার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।
অভিযোগ আছে, প্রকল্পের টাকা খরচ করতে বিভিন্ন দফতরের সাথে সমন্বয় না করে অপরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করছে চারঘাট পৌর কতৃপক্ষ। এতে প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ছে চারঘাট। বড়াল নদীর দখল করে পাবলিক টয়লেট ও রাস্তা নির্মানও পৌরসভার তেমনই একটি অপরিকল্পিত কাজ।
চারঘাট পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় ৫ টি পাবলিক টয়লেট নির্মান করা হচ্ছে। প্রতিটি টয়লেটের নির্মান ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে একটি নির্মান করা হচ্ছে স্লুইস গেট সংলগ্ন চারঘাট থানা ভ্যান রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতির পেছনে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতির পেছনে নদী ভরাট করে আরসিসি পিলারের ওপর টয়লেটটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ। টয়লেটের ভেতরের কাজ চলছে। নদী দখল করে রাস্তা নির্মান কাজও চলমান আছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নির্মানাধীন ওই টয়লেট ও রাস্তা নির্মানে পৌর কতৃপক্ষ যবর দখলের পরিচয় দিচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল বাঁধা দিলেও কর্ণপাত করেনি পৌর কতৃপক্ষ। স্থানীয় প্রশাসনসহ নদী রক্ষাকারী সংগঠন গুলোকে বুড়ো আঙুল দেখি টয়লেট ও রাস্তা নির্মান চলমান রেখেছে পৌর কতৃপক্ষ। নদী দখল করে নির্মাণ কাজ করায় নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
চারঘাট উপজেলা বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, পৌর কতৃপক্ষ বড়াল নদীকে গিলে খাচ্ছে। প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নদী দখল করে পাবলিক টয়লেট ও রাস্তা নির্মান করছে। কাজ চলমান থাকলে ওই ভবন ও রাস্তা ঘিরে আরও অনেক স্থাপনা নির্মান হবে। এতে এক সময় পুরো বড়াল নদী দখল হয়ে যাবে।
প্রায় চার মাস আগে সাবেক চারঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আনিসুর রহমান বলেছিলেন, নদীর জমিতে ঐ পাবলিক টয়লেট ও রাস্তা নির্মানে জেলা প্রশাসন কিংবা পাউবোর অনুমতি নেই, এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। নদীর জমিতে টয়লেট নির্মানে পৌর কতৃপক্ষকে একাধিকবার নিষেধ করেছেন তিনি। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে উচ্ছেদ কেস ফাইল করা হয়েছে।
চারঘাট উপজেলার নবাগত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়তি রানী কৈরী বলেন, আমি কিছুদিন পূর্বে চারঘাটে যোগদান করেছি। বিষয়টা সম্পর্কে ঠিকমত খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জানতে চাইলে পাউবোর নাটোর কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আল আসাদ বলেন, চারঘাট পর্যন্ত বড়াল নদীর পরিচালন ও রক্ষানবেক্ষন দায়িত্বে রয়েছে নাটোর পাউবো। পাউবোর কাছ থেকে ওই জমির কোনো বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া নদী দখল করে ভবন নির্মাণের জন্য পাউবোর অনুমতি নেই। বরং দখলমুক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে। যদি এটা কেউ করে থাকে, তবে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
চারঘাট পৌর মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুল বলেন, জনসার্থে নদীর জমিতে টয়লেট ও রাস্তা নির্মান করা হচ্ছে। পাউবোর কাছে থেকে লিখিত কোনো অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার জানা নেই, ওটা পৌরসভার প্রকৌশলী জানে।#
No comments