জেঁকে বসেছে শীত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ ||rajshahirdorpon24
জেঁকে বসেছে শীত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ |
নিউজ ডেস্ক:
কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। ফলে বিপাকে পড়েছেন জেলার চরাঞ্চল ও নদ-নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী হত-দরিদ্র মানুষ। বন্যায় ঘরবাড়ি হারানো এবং নদীগর্ভে বসতভিটা বিলীন হওয়া মানুষজন খোলা আকাশের নিচে ভুগছেন কনকনে শীতে।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে উন্নীত হয়ে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ১৪ ডিগ্রি হলেও সূর্যের দেখা মেলেনি।
শীতের কারণে শহরে কমে গেছে যান চলাচল। বাজার-ঘাটেও কমেছে মানুষের আনাগোনা। শীতের কারণে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে খামারীরা।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকাল দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন রাস্তাঘাট, নদ-নদী, খাল-বিল ও ফসলি জমি। শীতবস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাঁপছে নদ-নদী অববাহিকায় বসবাসকারী ও চরাঞ্চলের মানুষ। জীবিকার সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ সাধ্য অনুযায়ী নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছেন গরম কাপড়ে। তবে গরম কাপড় না থাকায় অনেকে হালকা কাপড় পরিধান করে বেরিয়ে পড়েছেন কাজের সন্ধানে। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি সহায়তার অপেক্ষায়। অনেককেই খড় খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
ধরলা সেতু এলাকার কৃষক মোসলেম জানান, আজ প্রচুর শীত পড়েছে। শীতের কারণে ধরলা অববাহিকায় পানিতে নেমে বোরো ধানের রোয়া (বীজতলা) রোপন করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
একই এলাকার নৌকার মাঝি বুলু জানান, শীতের কারণে এখন পর্যন্ত যাত্রীর দেখা মিলছে না। সারাদিন এ রকম থাকলে নদী পারাপারের যাত্রী পাবো না। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
ধরলার অববাহিকায় আশ্রয় নেয়া ভূমিহীন বিধবা রহিমা জানান, বন্যায় ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হওয়ায় এখন ধরলা অববাহিকায় অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি। নদীর পাড়ে খুবই শীত। দুই ছেলে বিয়ে করে আলাদা থাকে। আমাকে কেউ শীত বস্ত্র দিলে উপকৃত হতাম।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শামসুল হক জানান, ওয়ার্ডের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার ব্রাহ্মপুত্র নদের তীরে বসবাস করে। যাদের অধিকাংশই কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। এই পরিবারগুলোর শীত বস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। যদি সরকারিভাবে অসহায় পরিবারগুলোকে শীত বস্ত্র দেয়া হয় তাহলে খুবই উপকৃত হবে।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে তাপমাত্রা নামলেই শৈত্য প্রবাহ শুরু হবে। ডিসেম্বর মাসে দুটি শৈত্য প্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যে অনেক ইউনিয়নে শীতবস্ত্র দেয়া হয়েছে। সেগুলো চরাঞ্চলবাসীর মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। নতুন করে শীত বস্ত্র আসলে সর্বপ্রথম নদ-নদীর অববাহিকায় ও চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে বিতরণ করবো।#
No comments