তানোরে প্রতিবন্ধী স্কুলের সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ ||rajshahirdorpon24
তানোরে প্রতিবন্ধী স্কুলের সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ |
আলিফ হোসেন,তানোর
রাজশাহীর তানোরে প্রতিবন্ধী স্কুল অনুমোদনের আগেই শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের শুরুতেই সভাপতির এমন অনিয়ম-দূর্নীতিতে সম্প্রতি বন্ধ হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা। ফলে পাঠদান অনুমোদনের ৫ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি প্রতিষ্ঠানটি। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নাসিমা খাতুন নিরুপাই হয়ে সভাপতি আশরাফুল আলম সরকারের বিরুদ্ধে গত (১৩ ডিসেম্বর) রোববার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর অনুলিপি সমাজসেবা অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অভিযোগের ২৭ দিনেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাগমারা প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা কর্তৃক পরিচালনার নামে রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে কচুয়া-২ প্রতিবন্ধী কল্যাণ বিদ্যালয় নামে স্থাপন দেখানো হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের অবকাঠামো না থাকলে সাইনবোর্ড সর্বত্ব ঝুলানো হয়। ওই সাইনবোর্ডে নিবন্ধন সনদ- রাজশা-৯৮৯/১৫ দেখানো হয়েছে। কিন্তু এই সনদে বাগমারা প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা নামে বিদ্দমান রয়েছে। ওই সময় প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড দেখিয়ে গত ২০১৬ সালের ২৫ এবং ২৬ ডিসেম্বর শ্যামল বাংলা ও নতুন প্রভাত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন সভাপতি আশরাফুল আলম। এমন সাইনবোর্ড ও পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ওই এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা শিক্ষক হবার আগ্রহে সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এসুযোগে সভাপতি আশরাফুল আলম মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে গোপনে ২৪ জন শিক্ষক কর্মচারীকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিয়াগপত্র প্রদান করেন।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের মাহাঙ্কাল বগী নেতা কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই না করে ও এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে উপজেলার সীমান্তবর্তী কুচুয়া গ্রামে স্কুল স্থাপনে সহায়তার নামে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।এনিয়ে সভাপতি আশরাফুল আলম সরকার বলেছেন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের স্বার্থে শিক্ষক-কর্মচারীকে লিখিত প্রমাণ দিয়ে টাকা নেয়া হয়। এসব টাকা আমার ব্যক্তি স্বার্থে নয়, প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নে খরচ করা হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক নাসিমা খাতুন অভিযোগে জানান, সংস্থাটি ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারীতে নিবন্ধন পায়। এর বিধিমালা অনুমোদন দেখানো হয় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারীতে। কিন্তু সংস্থা নিবন্ধনের আগেই সকল শিক্ষক কর্মচারীকে ২০১৪ সালের ১০ জুলাই নিয়োগপত্র পাইয়ে দেয়া হয়। পরে ওই সালের ২৫ জুলাই শিক্ষক-কর্মচারী যোগদান দেখানো হয়। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, সভাপতি প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড সর্বত্ব দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। সংস্থার সীল ও প্যাড ব্যবহার করে কারও কাছে এক লক্ষ আবার কারও কাছে ত্রিশ ও পঞ্চাশ হাজার টাকা ডোনেশন নেন। এভাবে টাকা নিয়ে অফিস সহায়ক থেকে প্রধান শিক্ষকসহ ২৪ জন শিক্ষক কর্মকচারী নিয়োগ দেন সভাপতি আশরাফুল আলম সরকার। তাছাড়াও টাকার বিনিময়ে একই শিক্ষককে একাধিকবার নিয়োগ ও যোগদান করিয়েছেন।
অপরদিকে, প্রতিবন্ধী সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯-এর আলোকে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন না করে, ভূয়া তথ্য ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে প্রধান শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানে আসতে নিষেধ করা করা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানে জমিদাতা সদস্যকে বাদ দিয়ে অনলাইনে ভূয়া কাগজপত্র আপলোড করেছেন।
পরবর্তীতে নীতিমালা বহির্ভূত কাগজপত্র অনলাইনে আপলোড করা হলে বাতিল করে দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হলেন ওমর ফারুক চৌধুরী। কিন্তু এমপির ডিও লেটারে আব্দুল ওয়াদুদ এমপির নির্বাচনী এলাকা রাজশাহী-৫ কে (তানোর-গোদাগাড়ী) জালিয়াতি করে দেখানো হয়েছে।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মতিনুর রহমান বলেন, সভাপতি আশরাফুল আলম সরকারের এমন অনিয়ম-দূর্নীতির সত্যতা রয়েছে মর্মে বিগত ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর ৭০ পাতা বিশিষ্ট প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আমি সম্প্রতি গত ৩১ ডিসেম্বর অন্যত্র বদলি হয়ে গেছি।
তবে, বিষয়টি নিয়ে তানোর ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাতোর মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি
No comments