Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    তানোরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বিপরীতমুখী ||rajshahirdorpon24

     


    আলিফ হোসেন,তানোরঃ

    রাজশাহীর তানোর পৌরসভা নির্বাচনে ভোটের মাঠে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিপরিতমুখী অবস্থা বিরাজ করছে, যেখানে ভোটের মাঠে ঐক্যবদ্ধ বিএনপির বিপরীতে বিভক্ত বা অগাছালো আওয়ামী লীগ অনেকটা পিছিয়ে। জানা গেছে, তানোর পৌর নির্বাচনে বিএনপি পরীক্ষিত ও দক্ষ নেতৃত্ব মেয়র মিজানুর রহমানকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। 


    পৌর নির্বাচনকে বিএনপি তাদের অস্থিত্ব রক্ষার লড়াই ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। এদিকে তৃণমুল নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের মাঝে এই বোধদয় সৃস্টির পর ভোটের মাঠে নয়াসমিকরণ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সুত্র জানায়, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ শফিকুল হক মিলন ও সাবেক মেজর শরীফ উদ্দিনের দিকনির্দেশনায় তানোর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র মিজানুর রহমান মিজানের তৎপরতায় বিএনপির রাজনীতিতে রাতারাতি হয়েছে নাটকিয় পরিবর্তন  ফিরে এসেছে  প্রাণচান্চল্য।পৌর নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় ঘটিয়ে নিজেদের অস্থিত্ব ধরে রাখতে বিএনপির বহুধারায় বিভক্ত নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে ঐক্যর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে তাদের মধ্য বিরাজমান দীর্ঘদিনের মান-অভিমান ভুলে একে-অপরকে কাছে টানছে এতে তাদের মধ্য বিরাজমান দীর্ঘদিনের ক্ষোভ-অসন্তোষের বরফ গলতে শুরু করেছে। 


    ব্যবসা-বাণিজ্যে, চাওয়া-পাওয়া ও মান-অভিমানসহ নানা কারণে যেসব নেতাকর্মীরা  এতোদিন নিস্ক্রীয় ছিল তারাও মিজানের  বিজয় ঘটাতে নবউদ্দ্যেমে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী জানান, মিজানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয় সত্য, তবে ব্যক্তির চেয়ে দল বড় তায় এই নির্বাচন বিএনপির অস্থিত্ব রক্ষার লড়াই, তারা মিজানকে নয় বিএনপির অস্থিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ধানের শীষ প্রতিককে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।এদিকে ঐক্যবদ্ধ বিএনপিকে নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে বিজয়ী হবার দৌড়ে মিজান অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। এদিকে এটা সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন নয় তায় জাতীয় প্রতিক অধিকাংশ ক্ষেত্রে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে, এক্ষেত্রে পৌরসভার মধ্যবর্তী অঞ্চলের প্রার্থী ভোটারদের কাছে পচ্ছন্দের শীর্ষে রয়েছে।


    অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে বিশিস্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আবুল বাসার সুজন আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করে ভোটের মাঠে সম্ভবনাময় অবস্থান গড়ে তোলেন। 


    এখানে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর জনপ্রিয়তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না নির্বাচনী কৌশল কাজে লাগাতে পারলেই নৌকার নিরঙ্কুশ বিজয়ের উজ্জ্বল সম্ভবনা তৈরী হয়েছিল।কিন্ত্ত আবুল বাসার সুজনকে বঞ্চিত করে ইমরুল হককে মনোনয়ন দেয়া হয়। স্থানীয় সাংসদের নির্দেশে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী নৌকার বিজয় ঘটাতে ঐক্যবদ্ধভাবে শপথ নেয়। কিন্ত্ত মনোনয়ন পাবার পর ইমরুল হক স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, সুজন প্রমুখদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়। এছাড়াও ৩০ জানুয়ারী মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামেনি ইমরুল হক। এমনকি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রকাশ্যে নৌকার বিরোধীতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামে এবং রাব্বানীর নিজ ভোটকেন্দ্র চুনিয়াপাড়ায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার পরাজয় ঘটে।


     এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ ঘটনার পর রাব্বানী-মামুন তানোর পৌর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে মাঠে নামেন আর এতেই তৃণমুল তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে মুলত এখান থেকেই নেতাকর্মীদের মধ্য মতবিরোধের সুত্রপাত এবং তানোর পৌর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে রাব্বানী-মামুন মাঠে নামায় ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের সম্ভবনাময় গোছানো ভোটের মাঠ তছনছ হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমুল। তৃণমুলের ভাষ্য, দেশে এমপি নির্ভর রাজনীতিতে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপেক্ষা করে মুন্ডুমালায় নৌকার বিরোধীতা করে নৌকা ডুবিয়ে তানোর এসেছে নৌকা ভাষাতে, কিন্ত্ত কেনো মুন্ডুমালার নৌকা কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নৌকা নয়।


    এদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন মহলের অভিমত, বিগত দিনে জাতীয় সংসদ, জেলা পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনেও তারা নৌকার বিরোধীতা করেছে।মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার বিজয় ঠেকাতে বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়েছেন রাব্বানী-মামুন গ্রুপ নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করেছে। তানোর পৌরসভা নির্বাচনে তারাই নৌকার পক্ষে ভোট চাইছে-? সত্যি সেলুুুুকাস-তাহলে এসবের মানে কি দাঁড়াচ্ছে তারা যাকে সমর্থন করবেন তারাই কেবল  নৌকার লোক আর অন্যরা-? তারা যখন যেমন খুশি তেমন নৌকা নিয়ে ছেলে খেলা করবেন এটা কি সার্কাসের জোকার না নৌকা কোনো জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিক। 


    অথচ এমপি, জেলা পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও সদ্য সমাপ্ত মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে এরা ভোট করেছেন আবার তানোর পৌরসভা নির্বাচনে এরাই নৌকার ভোট চাচ্ছেন বাহ, মানুষ কি এতোই বোকা যে এরা যেমন নাচাবেন তেমনি তারা নাচবেন-? এদিকে রাজনৈতিক কারণে নেতারা মনে কস্টে নিয়েও তাদের মেনে নিলেও তৃণমুলের কর্মী-সমর্থকগণ কোনো ভাবেই মানতে পারছে না বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। কারণ তারা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও আদর্শিক আওয়ামী লীগ হয়, তাহলে প্রথমেই তাদের করনীয় ছিল মুন্ডুমালায় নৌকার বিজয় ঘটাতে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমে কাজ করা, কেননা মুন্ডুমালায় জয়-পরাজয় তানোর পৌরসভার ভোটে বড় প্রভাব পড়বে। অথচ তারা মুন্ডুমালায় নৌকার বিরুদ্ধে আর তানোর পৌরসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইছে সেটা কি সাধারণ মানুষ বোঝে না।


    স্থানীয় সুত্র জানায়, তারা এমপির বিরোধীতা করে পৃথক বলয় সৃস্টির লক্ষ্যে দায়িত্বশীল পদে থেকেও সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কোনো ভুমিকা তো রাখেইনি বরং জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে সৃস্টি করেছিল দলীয়কোন্দল, সাংগঠনিক অবস্থা ছিল নাজুক, ভেঙ্গে পড়েছিল চেইন অব কমান্ড,  হ-য-ব-র-ল  অবস্থা বিরাজ করছিল। ফলে সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে তৃণমুলের দাবির মুখে উপজেলা কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানি ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে সিনিয়র সহসভাপতি খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী ও রাম কমল সাহাকে সভাপতি-সম্পাদকের দায়িত্ব (চলতি) দেয়া হয়।


     এদিকে এসব নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমেনি বেড়েছে ভোটের পরিমানও। কিন্ত্ত কোথাও দুর্বল প্রার্থী আবার কোথাও দলের একশ্রেণীর নেতার  বিশ্বাসঘাতকতার জন্য নৌকার পরাজয় ঘটেছে।এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728