Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    আশুলিয়ার গ্যাস চোরদের ধরতে ‘নয়ছয়’ পুলিশের ||rajshahirdorpon24

     

    আশুলিয়ার গ্যাস চোরদের ধরতে ‘নয়ছয়’ পুলিশের


    মোঃ শান্ত খান ঢাকা জেলার প্রতিনিধি :

     ঢাকার সাভারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানকারী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম যেন ততই বাড়তে থাকে। নানা উপায়ে প্রভাবশালীরা মূল্যবান রাষ্ট্রীয় এই সম্পদের হরিলুটে যেন মত্ত। মূলত মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব সংযোগ প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে মাঝে মধ্যে দুই-একটি অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানের গোপন খবর ছড়িয়ে পড়ে বাইরে। অভিযোগ আছে, এলাকাবাসী কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় এই সম্পদ চুরির ঘটনা পুলিশকে জানালেও নেয়া হয় না ব্যবস্থা। এমনকি ঘটনাস্থলে পৌছে পুলিশ চিহ্নিত অবৈধ গ্যাস চোরদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়েই ফিরে এসেছে। উল্টো গোপন খবর প্রদানকারীদের নানা ভাবে হেনস্তারও অভিযোগ আছে।  


    অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে আশুলিয়ার জামগড়া, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুর, চিত্রশাইলসহ বেশ কিছু এলাকায় রাতের আঁধারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। মূলত রমজান মাসেই এই অবৈধ সংযোগ প্রদানের হিড়িক বেশি থাকে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অবৈধ সংযোগ প্রতি ২০-৫০ হাজার পর্যন্ত মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।


    অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার ভোরে আশুলিয়ার তাজপুর ইউসুফ মার্কেট এলাকায় জেনারেশন লিমিটেড নামে একটি গার্মেন্টের সামনে অবৈধ সংযোগ প্রদানের প্রস্তুতি চলছিল। স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে রফিক নামে এক শ্রমিককে তরিঘরি করে গর্ত বন্ধ করতে দেখা গেলেও বাকীরা পালিয়ে যায়। বেশ কিছু এলাকা জুড়ে সেখানে গর্ত করে রাখা অবস্থায় পাওয় যায়। মূলত এসব গর্ত দিয়েই মূল সঞ্চালন লাইনের সাথে এক কিংবা দেড় ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ সংযুক্ত করে সংযোগ নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসময় অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানকারী প্রভাবশালী মো. রশিদ, নাজিম উদ্দিন ও আবুল কাশেম সহ ১০-১৫জন দলবেঁধে সেখানে উপস্থিত হন। তারা এসময় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার আপ্রান চেষ্টা চালাতে থাকেন। তবে তাৎক্ষণিক স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বিষয়টি আশুলিয়া থানায় অবগত করা হয়। কিন্তু আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিলন ফকির আসতে বিলম্ব হবে বলে সাংবাদিকদের জানান। প্রায় ঘন্টা খানেক পর তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। থানার এই কর্মকর্তা এসময় অবৈধ সংযোগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উল্টো সাংবাদিকদের অসংলগ্ন জেরা করতে থাকেন। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করেন। এরপর কোন প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এসআই মিলন ফকির। 


    অভিযুক্ত আবুল কাশেম ও বলেন, ‘আপনেরা দশ মিনিট খাড়ান। আমি বইলা, ট্যাকাটা নিয়া দিতাছি। আপনেরা ট্যাকাটা নিয়া জানগা। আমার নাম, নাম্বার নিয়া কি করবেন? ওই এখন আমার নাম্বার টাম্বার দিয়া লাভ নাই। আমার কোন সমস্যা নাই।’


    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবৈধ গ্যাস গ্রহীতারা বলেন, ‘এলাকায় প্রায় ৪০-৫০টা বাড়িতে গ্যাস দিবো কইয়া ২০-৫০ হাজার কইরা ট্যাকা নিছে। আমরাতো জানি না কুনডা বৈধ, কুনডা অবৈধ। অহন আমাগো দিছে আমরা নিতাছি।’


    অবৈধ গ্যাস চুরির খবর প্রদানকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাই এলাকায়তো আমারে নিয়া তাণ্ডব চলতাছে। আমি না কি এলাকায় পুলিশ, সাংবাদিক আইনা ভরায় ফেলছি। বিষয়টা এই পর্যন্ত শেষ করা যায় না?’


    এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিলন ফকিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছলচাতুরির আশ্রয় নেন। 


    তিনি বলেন, ‘ভাই, আপনারা চলে যান। ঘটনাস্থলে যাইয়া কাউরে পাই নাই। আর লিখিত কোন অভিযোগ পাই নাই। তদন্ত চলতেছে। তদন্ত চলুক, তদন্তের প্রেক্ষিতে যেটা হয় আর কি। আর কি দিয়া, কি হয় আমি জানামুনে।’ 


    এর আগে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলামকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানের বিষয়টি জানানো হলে তিনি ওই এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তবে এরপর থেকে তাকে আর চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728