অবৈধ ড্রেন লাইন নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষ, সন্ত্রাসী ফারুক গ্রেপ্তার!||rajshahirdorpon24
মোঃ শান্ত খান সাভার প্রতিনিধি:
সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া এলাকায় জোরপূর্বক স্যুয়ারেজ লাইন নির্মান কাজে বাঁধা দেয়ায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় সন্ত্রাসীদের মারধরে নারীসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে আশুলিয়ার কাঠগড়া বাঘের চালা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় পুলিশ সন্ত্রাসীদের গড ফাদার ফারুক আহম্মেদ ওরফে ড্রেন ফারুককে গ্রেপ্তার করেছে।
আহতরা হলো- কাঠগড়া বাঘের চালা এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে আলী আহম্মেদ মাস্টার (৬৫), তার ছেলে জিসান (২৭), পারভিন আক্তার (৫০), মোঃ পাপ্পু (২৬), আসিফ (১৮), শিহাব (২২), কাউসার (২৭) ও লিপি আক্তার (৩৫)।
হামলার শিকার ভুক্তভোগীরা জানায়, আশুলিয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহীন পালোয়ান কাঠগড়া এলাকার ৬ হাজার ৪৮০ মিটার রাস্তা কর্তন করে নিজস্ব খরচে স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণের অনুমতি পেয়েছেন উপজেলা থেকে। রবিবার সকালে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মাদবর ওই সুয়্যারেজ লাইন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমেদ তার নিজের নামে বরাদ্দকৃত ৭০০ মিটারের বাইরে এসে অবৈধভাবে শাহীন পালোয়ানের নামে অনুমোদন করানো যায়গায় স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণ শুরু করে। রবিবার সকালে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে ঘটনাস্থলে আসেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদিপ কুমার গোপ। এসময় ফারুক আহম্মেদের লোকজন পুলিশের উপস্থিতেই শাহিন পালোয়ানের লোকজনের উপর দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। এর আগেও বিষয়টি থানা পুলিশসহ এলজিইডি'র উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
তিনি আরও বলেন, পুলিশকে ঘটনাস্থল দেখাতে নিয়ে গেলে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের উপর সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা করে ফারুক ও তার লোকজন। এসময় কাঠগড়া প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলী আহম্মেদ মাস্টার ও পরিবারের সদস্যরা আমাকে বাঁচাতে আসলে তাদের উপরও হামলা চালায় আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফারুক, তার ভাই আশরাফ শিকদার। এসময় হাসান, টিপু, সোহেল মোল্লা, আশরাফ ও জশিমসহ প্রায় ২০-২৫ জন হাতুরী, রামদা, চাপাতীসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। এঘনায় নারীসহ অন্তত ৮ জন।
আহত আসিফ বলেন, ফারুক আহম্মেদ এলাকায় এমন কোন অপকর্ম নাই করেনা। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এলাকায় অবৈধ গ্যাস দিয়েছে। এছাড়া প্রতিমাসে টাকা না দিলে গ্যাস বন্ধ করে রাখে। বর্তমানে তিনি এলাকায় সাতশ মিটার সুয়্যারেজ লাইন নির্মানের অনুমোদন এনে প্রায় এক হাজার মিটার ড্রেন নির্মান করেছে। সরকারী নিষেধাজ্ঞা সত্বেও আরও ড্রেন লাইন নির্মান করছে এবং প্রতি বাড়ি থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা জোরপূর্বক আদায় করছে। কেউ টাকা দিতে না চাইলেই অত্যাচার, নির্যাতনসহ বিভিন্নভাসে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করায় এলাকাবাসী তাকে ড্রেন ফারুক নামে ডাকেন।
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ফারুক আহম্মেদ বলেন, আমি আমার অনুমোদনকৃত জায়াগায় সুয়্যারেজ লাইন নির্মানের কাজ করতে গেলে আমার লোকজনের উপর হামলা চালানো হয়। এঘটনায় আমার কয়েকজন লোকজ আহত হলে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সুয়্যারেজ লাইন নির্মানের বিষয়ে সাভার উপজেলা প্রকৌশলী সালেহ হাসান প্রামাণিক বলেন, অবৈধভাবে সুয়্যারেজ লাইন নির্মানকে কেন্দ্র করে হামলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এঘটনায় সোমবার আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রশাসনের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবো। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ কুমার গোপ বলেন, অবৈধ সুয়্যারেজ লাইন নির্মানের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। এসময় আমরা কাজ বন্ধ করে চলে আসার পর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনতে পেরেছি। কিন্তু আমার সামনে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। এঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের হলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
No comments