অস্ত্র মামলায় চার দিনের রিমান্ডে মেয়র মুক্তার!||rajshahirdorpon24
অস্ত্র মামলায় চার দিনের রিমান্ডে মেয়র মুক্তার! |
স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার আলোচিত মেয়র মুক্তার আলীকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক আরিফুল হক এই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঘা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৈয়ব আলী সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত চার দিন মঞ্জুর করেছেন। বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নজরুল ইসলাম জানান, আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করায় মেয়র মুক্তার আলীকে কারাগারে পাঠানোর প্রয়োজন হয়নি। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতেই আছেন। রিমান্ড শেষে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
গত মঙ্গলবার রাতে এলাকায় এক শিক্ষককে মারধর করেন মেয়র মুক্তার আলী ও তাঁর সহযোগীরা। মারধরের শিকার হয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে রাতেই থানায় মামলা করেন ওই শিক্ষক। এরপর রাতেই মেয়রের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এর আগেই মেয়র বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। অভিযানে বাড়ি থেকে সই করা চেক, আগ্নেয়াস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
এ সময় আটক করা হয় মেয়রের স্ত্রী জেসমিন আক্তার এবং দুই ভাতিজা শান্ত ও সোহানকে। অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধারের ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে বুধবার থানায় দুটি মামলা করা হয়। আসামি হন মেয়রও। এরপর শুক্রবার ভোররাতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি থেকে মুক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুক্তারের সঙ্গে তাঁর সহযোগী হিসেবে শ্যালক রজব আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর মুক্তার আলীকে নিয়েই আড়ানী পৌরসভার পিয়াদাপাড়া মহল্লার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তখনও বাড়িতে মেলে আরও এক লাখ ৩২ হাজার টাকা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও ধারালো চাকু। এ ঘটনায় অস্ত্র ও মাদক আইনে আরও দুটি মামলা করে পুলিশ।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, বুধবার ও শুক্রবার দায়ের হওয়া দুটি অস্ত্র মামলায় মেয়র মুক্তারের রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে মুক্তার ও তাঁর শ্যালকের পক্ষে তাঁদের আইনজীবী জামিন আবেদন করেছিলেন। সন্ধ্যায় শুনানির সময় বিচারক জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেছেন। এ সময় আদালত শুধু মেয়রের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এরপর তাঁকে পুলিশ হেফাজতেই নেওয়া হয়েছে। আর শ্যালক রজবকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও জানান, গত বুধবার মেয়রের স্ত্রী এবং দুই ভাতিজাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের রিমান্ড চাওয়া হয়নি। তবে তাঁদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত তাদেরও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
মুক্তার আলী ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। পরে হন কাউন্সিলর। ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে হন মেয়র। এ বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে ভোট করে জয়ী হন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় ভোটের সময় পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে মুক্তার আলীকে বহিষ্কার করা হয়। মুক্তারের বিরুদ্ধে আগে থেকেই পাঁচটি মামলা ছিল। গত বুধবার থেকে আরও পাঁচটি মামলা হওয়ায় এখন তিনি ১০ মামলার আসামি।
No comments