Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    সাভারে নারীর সম্ভ্রম হানি করে ছেলেকে মাদবর দন্ড!অতপর পাল্টা অভিযোগ||rajshahirdorpon24

     

    ফাইল ফটো


    মোঃ শান্ত খান সাভার প্রতিনিধি:

    মায়ের সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে নানাভাবে অত্যাচারের শিকার হয়েছেন এক হতভাগা সন্তান। স্থানীয় মাদবররা মাথার চুল কেটে দিয়ে মারধর করে লেপটে দেওয়ার চেষ্টা করছেন অপবাদ। এঘটনায় অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি ভুক্তভোগীর।


    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভারের ভাটপাড়া এলাকার সিকম আলীর ছেলে মো. হাকিমের (৪০) গাড়ির চালক শামসুল ইসলাম বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী ওই নারীকে মোবাইল ফোনে উত্যক্ত করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জুলাই রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ভুক্তভোগীর বাড়িতে যায় শামসুল। এসময় ঘরের লাইট বন্ধ করে জোরপূর্বক ওই নারীকে জাপটাইয়া ধরলে চিৎকার করেন। মায়ের চিৎকার শুনে লাঠি নিয়ে ঘরে যায় ছেলে রাসেল। সেখানে শামসুলকে দেখতে পেয়ে তার পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে রাসেল। পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় সে। এঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।


    ভুক্তভোগী রাসেল জানান, ৭ জুলাইয়ের ঘটনার পর দিন সে তার বন্ধুর সাথে ভাটপাড়া বাজারের দিকে যাচ্ছিল। এসময় শামসুল তাদের দেখতে পায়। পরে তাদের ডেকে নিয়ে হাকিমের অফিসে বসায়। এসময় প্রায় ঘন্টাব্যাপী হাকিম, ফকিরা, কেটু শাহজাহান, রায়হান, ইয়াজ উদ্দিন মাদবর সহ ১০ থেকে ১৫জন মারধর করে বিচার বসায়। বিচারে মায়ের ঘরে শামসুলকে লাঠি দিয়ে আঘাত করায় তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। সাথে জরিমানা করা হয় ১০ হাজার টাকা। জরিমানার ৪ হাজার ৭০০ টাকা আদায় করেন মাদবররা। পরে রাসেলের মোবাইল ফোনটি নিয়ে রেখে দেয় হাকিমসহ অন্যান্যরা। বাকি টাকা দিয়ে মোবাইলটি নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে থানায় অভিযোগ করায় নাটক সাজিয়ে উল্টো অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে হাকিম।


    এলাকাবাসী জানান, ওই এলাকার নারী ব্যবসা, মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, বিচারের নামে জরিমানা, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের কুকর্ম করে নাম-ডাক কামিয়েছেন হাকিম। তার গাড়ির চালক হওয়ায় দাপটের সাথে শামসুলও নানা অপকর্ম করে চলেছেন দেদারসে। এরই ধারাবাহিকতায় স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারীর বাসায় যায় সে। এছাড়াও লিপি(২৪) নামে এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগে গেল এক মাস আগে এক কাউ্নসিলরের মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা গুনেছেন হাকিম। ভাটপাড়া এলাকার আরেক বাসিন্দা শাহীন আলমের নির্মাণাধীন ভবন থেকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠলে ভুক্তভোগী শাহীন সাংবাদিক সম্মেলন করলে বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় পরে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যায় হাকিম। ওই এলাকায় নতুন বাড়ি করলে ইট, বালু, সিমেন্ট, মিস্ত্রি সবই তার কাছ থেকেই নিতে হয় এসবের জন্য সাজু, মিলন, সাইদুল ও মানিককে দায়িত্ত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব না নিলেই কাজ বন্ধ করে দেয় হাকিম। সাথে রয়েছে বড় ব্যবসা বিচারের নামে জরিমানা আদায়।


    ভুক্তভোগী নারী বলেন, গত ৭ জুলাই  শামসুল আমার ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। এসময় সম্ভ্রম হরণের চেষ্টা করলে আমার ছেলে লাঠি দিয়ে শামসুলকে আঘাত করে। এসময় সে পায়ে আঘাত পায়। পরের দিন বিচারের নামে আমার ছেলেকে মারধর করে মাথার চুল কেটে দেয়। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করি ৯ জুলাই। ঘটনা শুনে কয়েকজন সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করলে অভিযুক্ত হাকিম ও শামসুলসহ মাদবররা নিজেদের বাঁচাতে নাটক সাজিয়ে আমার অভিযোগের প্রায় ১২ ঘন্টা পর শামসুল এর স্ত্রীকে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন। ছেলে আমাকে বাঁচাতে শামসুলকে আঘাত করার তিন দিন পর অভিযোগ দায়ের করলেন তারা। 


    বিচারে হাকিমের অফিসে উপস্থিত বৃদ্ধ শাহজাহান বলেন, আমি হাকিমের অফিসে ছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি গন্ডগোল। বিচার করেছে হাকিম, ইয়াছিন মাতবর ও রায়হানসহ আরও কয়েকজন। তারা ওই ছেলেটিকে মারধর করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। ৪ হাজার ৭০০ টাকা জোরপূর্বক আদায় করে রাসেলের মাথার চুল কেটে দেয় তারা। পরে  তার মোবাইলটাও রেখে দিয়েছে।


    এব্যাপারে অভিযুক্ত হাকিম বলেন,আমি চুল কাটি নাই, মাদবররা কাটছে। সে মারামারি করেছিল তাই তার বিচার করা হয়েছে। 


    এ বিষয়ে সাভার মডেল থানা থেকে দেওয়া ভুক্তভোগীর অভিযোগের কপির পিছনে থাকা  পুলিশের উপ- পরিদর্শক সালাউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সারাদিন ঢাকায় ছিলাম, অভিযোগের কাগজ এখনো হাতে আসেনি। আগামীকাল তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728