তানোরে মামলাবাজ নারীর দৌরাত্ম্য জনজীবন অতিষ্ঠ||rajshahirdorpon24
ফাইল ফটো |
তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) সাহাপুর গ্রামের এক মামলাবাজ নারীর সাজানো মামলা ও নানামুখি অভিযোগে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ওই নারী একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নিরহ মানুষদের নাজেহাল করলেও মামলার ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। ফলে দিনে দিনে তার দৌরাত্ম্য চরমে পর্যায়ে উঠেছে। গ্রামবাসি রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৯ জুন একই গ্রামের দুরুল ইসলাম তার স্ত্রী তানিয়া বেগম, শশুর বাবুল ইসলাম, শাশুড়ি জায়েদা বিবিসহ একই পরিবারের মোট ৬ জনকে আসামী করে নাসিমা নামের ওই নারী বাদি হয়ে তানোর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় অন্যরা জামিন পেলেও দুরুল ইসলাম ও তার শ^শুর জেল হাজতে আছেন।
এদিকে নাসিমার মামলায় দুরুলসহ তার পরিবারের লোকজন কারাগারে থাকায় বাড়ী ফাঁকা পেয়ে নাসিমার বাড়ীর নিকটে অবস্থিত দুরুলের দরজার তালা ভেঙ্গে গত ২৮ জুন দিবাগত রাত্রিতে ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণাংকারসহ প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট হয়। এ বিষয়ে দুরুলের শাশুড়ী জায়েদা বিবি বাদী হয়ে পরের দিন ২৯ জুন হাবিবুর রহমান, দুলাল হোসেন, আব্দুল আজিজ, আক্তার হোসেন ও মনিরুল ইসলামের নাম উল্লেখ্য করে তানোর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অভিযোগ হলেও রহস্যজনক কারণে থানা মামলা রেকর্ড করেনি।
অভিযোগকারী জায়েদা বিবি জানান, ‘আমার কোন ছেলে সন্তান নেই। তিনটি মেয়ের মধ্যে ১টি মান্দা উপজেলার সাবাইহাটে বিয়ে দিয়েছি আর বড় মেয়ের গ্রামে বিয়ে দিয়ে নাসিমার বাড়ীর পাশ্বে জামাইকে বাড়ী নির্মাণ করে দিয়েছি। কিন্তু সেখানে বাড়ীতে বসবাস করার পর হতে প্রায় গত এক বছর ধরে আমার জামাই-মেয়ের উপর বিভিন্ন অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে। সর্বশেষ ১৯ জুন আমার স্বামী, জামাই-মেয়ে, আমার ছোট ভাই ও আমাকে আসামী করে নাসিমা একটি সাজানো মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে সেই মামলায় আমার স্বামী ও জামাই জেলাখানায় থাকায় দুটি ছোট কন্যা সন্তান নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় মধ্যে দিন কাটছে আমার। তিনি আরো বলেন, ‘মামলাকারীর আপন ছোট ভাই দুলাল হোসেন ও তার লোকজন আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করছে। এ বিষয়ে তানোর থানার এসআই আমিনুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘জায়েদার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত করে মালামাল চুরি হওয়ার কোন সত্যতা পাইনি। ফলে তার অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না’।
ওদিকে সরেজমিন এলাকাবাসির অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তানোর উপজেলার সাহাপুর গ্রামের নাসিমা খাতুন নামের এই মহিলা উল্লেখিত গ্রামে রাস্তার ধারে সরকারী খাস জমি দখল করে বসতি গড়ে তোলার পর থেকে তুচ্ছ কোন ঘটনা ঘটলেই সে এলাকার নিরাপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকেন। অভিযোগ আছে গত কিছুদিন পূর্বে একই গ্রামের ফরিদ নামের এক ব্যাক্তি বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির পর এক পর্যায়ে টাকার বিনিময়ে মিমাংসা হন। এর কিছুদিনের মধ্যে শরিফুল নামের অন্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তার কাছে থেকে মোটা অংকের টাকার নিয়ে অভিযোগ উঠিয়ে নেন। নাসিমা খাতুন এই রকম অসংখ্য মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে এভাবেই হয়রানি করে আসছেন। তবে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য নাসিমার বাড়ীতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
No comments