Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    ধামরাইয়ে কপি-পেস্ট এজাহারে থানায় ৫ মামলা ||rajshahirdorpon24

     

    ধামরাইয়ে কপি-পেস্ট এজাহারে থানায় ৫ মামলা

    মোঃ শান্ত খান ঢাকা জেলা প্রতিনিধি:

    ঢাকার ধামরাইয়ে আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে একই রকম এজাহার ও একই আসামির বিরুদ্ধে একই দিনে 'কপি-পেস্ট' করে ৫ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে ওই প্রকল্পের ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটকের প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা পর কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের নামে আলাদা ৫টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার বাদী করা হয়েছে ওই প্রকল্পের বালু ভরাট সহ অন্যন্য কার্যক্রম পরিচালনায় বাঁধা দেয়া মামলার আসামির পরিবারের সদস্যদেরকে।


    ঢাকার ধামরাই থানায় গত ৩ আগস্ট ঘটেছে এমন ঘটনা। যেখানে মাত্র ৩ দিন আগেই হত্যা চেষ্টা মামলার ৬ আসামীকে ধরতে ব্যর্থ হয় থানা পুলিশ। সেখানে মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানেই আসামীদের পরিবারের সদস্যদের দেয়া মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে প্রকল্পের ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। 


    জানা যায়, কয়েক বছর আগে ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক ও এলামনাই  এক ফসলি জমিতে বসবাসের জন্য নিরাপদ একটি আধুনিক আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলতে জমি ক্রয় করে আসছে।এ কাজে আকসির নগর লিমিটেড তাদের সহযোগিতা করছে। সম্প্রতি জমি ভরাটে বালু ফেলা শুরু হলে বালুর চুক্তি নিয়ে ব্যবসার প্রস্তাব দেন স্থানীয় বদরুল সরদার, সাইদুর রহমানসহ ৫-৬ জন ব্যক্তি। তবে কোম্পানি জমি বিক্রেতাদের প্রায় ৪০০ পরিবারের সদস্যদের সেই চুক্তি দিয়ে দেয়ায় বিরোধিতা শুরু করে ওই চক্রটি। কেনা জমিতে ঢুকতে গেলে বাঁধা দেয়া, মারধর করার মত ঘটনা ঘটায় ওই চক্র ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।



    চক্রটির বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। সাভার, ধামরাইয়ে তাদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন ধরণের আধা ডজন করে মামলা রয়েছে। এছাড়া কথিত যে জমি নিয়ে বিরোধের অভিযোগ, সেই জমির কোথাও কোনদিন কোন হিস্যা ছিল না এই চক্রের। এদের কেউ ব্যর্থ রাজনীতিবিদ, কেউ তার সহযোগী কর্মী, কেউ ভবঘুরে, কেউ দূরে থেকে করেন অন্য ব্যবসা। জমির মালিক না হয়েও লাভবান হতে তারা কোম্পানিকে হেনস্তার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক বছরে আকসির নগরের ওপর বারবার হামলা করার চেষ্টা করেছে চক্রটি। তাদের অস্থায়ী কার্যালয় ভাংচুর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে লিখিত অভিযোগও দেয় তারা। ভূমি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করে এখানে কোম্পানির ব্যবসায় কোন ত্রুটি নেই বলে রিপোর্ট দেন এসি ল্যান্ড অন্তরা হালদার। এছাড়া জেলা ভূমি কার্যালয় ও আবাসন কতৃপক্ষও তাদের প্রকল্প পরিদর্শন করে। তবুও ওই চক্রকে থামানো যায়নি।


    অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি মামলার বাদী হয়েছেন জিয়াসমিন আক্তার নামে এক নারী। তিনি আকসির নগরের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা চক্রের মূল হোতা বদরুল সরদার ওরফে খাস বধু । তিনি অত্র ইউনিয়নের সাবেক যুবদল নেতা। দৃশ্যমান কোন কাজ না করেও যিনি ঘুরে বেড়ান প্রাইভেটকারে। জানা যায়, বালু ব্যবসা করতে চাওয়ার মূল হোতা তিনি। কোম্পানির ব্যবসা না করতে পেরে এলাকার মানুষদের ক্ষেপিয়ে তুলে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এ কাজে ব্যবহার করেন কুল্লা ইউনিয়নের বর্তমান জাতীয়াতাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান ও বিভিন্ন থানার একাধিক মামলার আসামী ভঞ্জন রায়কে। গত বছর টেঁটা দিয়ে আকসির নগরের এক গাড়ি চালকের ওপর হামলা চালান তিনি। চালক গাড়িতে থাকা লাঠি দিয়ে পাল্টা আঘাত করলে পা ভেঙ্গে যায় ভঞ্জনের। ৩ আগস্টে ৫ মামলার দ্বিতীয়টির বাদী হয়েছেন সেই ভঞ্জনের মা 

    সাম দাসি। আরেক মামলায় বাদী হয়েছেন লাভু নামে এক ব্যক্তি। এলাকায় যার পরিচিতি ভবঘুরে হিসেবে।


    এসব মামলায় প্রতারণা করে জমি দখল (৪০৬, ৪২০, ৫০৬ তারিখ- ১ আগস্ট), হত্যা চেষ্টা ও মাটি চুরি (১৪৩, ৩২৩, ৩০৭, ৩৭৯, ৩৪ তারিখ- ৫ জুন), (১৪৩৪, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩৪ তারিখ- ২৪ ফেব্রুয়ারি) হাড় ভাঙ্গা জখম, মারধর, টাকা চুরির অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া এসব মামলার ঘটনার দিন, তারিখ ও সময় পেরিয়ে গেছে বহু আগে। সেসময় থানায় কোন লিখিত অভিযোগও হয়নি।


    ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মাসুদ খান খোকন বলেন, ৫টি মামলাই যেভাবে সাজানো হয়েছে। সবগুলোতে একই আসামী। এখানে যারা বাদী তাদের পরিবারের সদস্যরা আসামি হয়ে পলাতক ছিলেন।


    তিনি আরও বলেন, 'এমন মামলা যে উদ্যেশ্য প্রণোদিত তা সহজেই বুঝে ওঠা যায়। এজন্য শুনানিতে বিবাদী কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকেন। আর তদন্তেও যদি বিবাদী না রাজি দেন, তাহলে পুলিশের কাছ থেকে অন্য কোন সংস্থা এটার তদন্তের দায়িত্ব পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ঘটনার সত্যতা না মিললে মামলা দিয়ে হয়রানি করা ও হয়রানিতে সহায়তা করা দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই মানহানি মামলা করতে পারবেন বিবাদী পক্ষ।


    এর আগে এদিকে পুলিশের শীর্ষ এক কর্মকর্তার নির্দেশে এমন হঠাৎ এমন মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ধামরাই থানা পুলিশের কর্মকর্তারা।


    মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আতিক রহমান বলেন, 'তাদের বিরুদ্ধে পূর্বেও অভিযোগ ছিলো। সম্প্রতি তদন্ত করে তাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় মামলা রুজু করা হয়েছে।


    তবে এবিষয়ে জানতে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ সরদারকে ফোন করা হলে তিনি কল ধরেননি।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728