তানোরে আলোচনায় ময়না-প্রদিপ||rajshahirdorpon24
তানোরে আলোচনায় ময়না-প্রদিপ |
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগামী ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবার সম্ভবনা রয়েছে। এবার নেতাকর্মীরা ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচন করতে চাই। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযানের পর কাউন্সিল করার দাবি করে কেন্দ্রীয় কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। এবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং আদর্শিক নেতৃত্ব লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ও সাধারণ সম্পাদক পদে তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদিপ সরকার পচ্ছন্দের শীর্ষে রয়েছেন। এতে সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুনের কপাল পুড়ছে এটা প্রায় নিশ্চিত। কারণ বিগত ২০১৯ সাল থেকে সভাপতি ও সম্পাদক সব ধরণের সাংগঠনিক কর্মকান্ড থেকে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছে, এতে নেতা ও কর্মী-সমর্থকগণ তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ন হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্ত্ত করোনার কারণে সম্মেলন স্থগিত করা হয়।
এদিকে আগামি ডিসেম্বর সম্মেলনের সম্ভবনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।এতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তৃণমুলের ভাষ্য, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদর্শিক ও তরুণ নেতৃত্ব দিতে হবে, আর সেই ক্ষেত্র এগিয়ে রয়েছেন ময়না ও প্রদিপ সরকার। তৃণমুলের অভিযোগ উপজেলা কমিটির সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন একটানা প্রায় একযুগ দায়িত্ব
পালন করেছেন।
তবে তাদের বেঈমানির কারণে দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ড কখানোই জোরদার হয়নি।এমনকি সভাপতি ও সম্পাদক একে অপরকে বেঈমান-মিরজাফর ও বিশ্বাসঘাতক, চশমখোর অ্যাঙ্খায়িত করে দু’জনেই তাদের অনুসারী নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেয়ায় দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ড অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে। আবার উপজেলা নির্বাচনে দুই বার গোলাম রাব্বানীকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়, আর সম্পাদক মামুন দুই বারই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে রাব্বানীর পরাজয় ঘটায়। আবার তানোর পৌরসভা নির্বাচনে দুইবার প্রদিপ সরকারকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে দুই বারই রাব্বানী-মামুনের ইশারায় ইমরুল হক বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রদিপ সরকারের পরাজয় ঘটায়। এছাড়াও এরা জাতীয় সংসদ, জেলা পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এরা প্রকাশ্যে সরাসরি নৌকার বিপক্ষে ভোট করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা নিয়ে মতবিরোধ ও দলের মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করা কি একই বিষয়-? যদি সেটা না হয় তাহলে যারা দল, নেতা ও নেতৃত্বের সঙ্গে বেঈমানী করে নৌকার পরাজয় ঘটায় তারা কোন আওয়ামী লীগ এদের কি নৈতিকভাবে আওয়ামী লীগে থাকার অধিকার রয়েছে। এসব বিবেচনায় এবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আদর্শিক ও তরুণ নেতৃত্ব দেয়া সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে গত ২৭ নভেম্বর শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শরিফ খাঁনের সভাপতিত্বে উপজেলা আওয়ামী উদ্যোগে উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী বাসভবন চত্ত্বরে আয়োজিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্য-নির্বাহী কমিটির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ এসএম একরামুল হক এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংসদ প্রতিনিধি ও উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না।
এদিকে সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের দাবির মুখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ্ আল মামুনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরিফ খাঁনকে (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি ও উপজেলার যুগ্ম-সম্পাদক রাম কমল সাহাকে (ভারপ্রাপ্ত) সম্পাদক ঘোষণা করেন জেলার নেতৃবৃন্দ। এবিষয়ে তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার বলেন, তারা এসব নিয়ে ভাবছেন না, তারা ভাবছেন আগামিতে সবাই মিলেমিশে কিভাবে একটি ভাল সম্মেলন করা যায়।
এবিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এসএম একরামুল হক বলেন, যারা নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হবে এবং যারা বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করবে তারা দলের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারা মোতাবেক বহিস্কার হবে। তিনি বলেন, নেতাকর্মীরদের দাবি ও মতামতের ভিত্তিত্বে সভাপতি-সম্পাদককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তারা দলের দায়িত্বশীল পদে থেকেও দীর্ঘদিন ধরে সংগঠন বিরোধী কাজ করে আসছে।
No comments