চারঘাট উপজেলার বরকত আলী ৪০ বছর ধরে ঘোড়াই রাজকীয় পোশাকে! ||rajshahirdorpon24
বরকত আলী ৪০ বছর ধরে ঘোড়াই রাজকীয় পোশাকে! |
আব্দুল মতিন, চারঘাট:
যানবাহনে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। মানুষ এখন যন্ত্র নির্ভর হয়ে পড়েছে। যানবাহনের জন্য বাস, ট্রাক, ট্রেনের ব্যবহার। এমন কি এক সময় প্যাডেল ভ্যানে লেগেছে যন্ত্রের ছোঁয়া। কিন্তু রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ডাকরা পাগল পাড়া এলাকার বরকত আলীর বিষয়টি আলাদা। ৪০ বছর আগে তার ঘোড়ার পিঠে চড়া শুরু। আজও তাই। যন্ত্রের যানবাহন তার ভালো লাগে না। ঘোড়ার পিঠে চড়েই তিনি ঘুরে বেড়ান।
হাট-বাজার, কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি সব জায়গাই ঘোড়ার পিঠে চড়েই ঘোরেন ডাকরা পাগলপাড়া গ্ৰামের বরকত আলী। সভ্যতা ও যান্ত্রিক যুগেও তিনি এ অভ্যাস বদলাতে পারেন নি। তাই পরিবহনের সঙ্গী হিসেবে তিনি আজও ঘোড়া পোষেন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরেই ঘোড়ায় তার সঙ্গী। তিনি ঘোড়াটির নাম দিয়েছেন লালমিয়া।
দীর্ঘ ৪০ বছর ধরেই ঘোড়ায় তার সঙ্গী |
বিভিন্ন রাজকীয় পোশাকে দেখা যায় বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘোড়ার পিঠে চেপে রাস্তা দিয়ে মানুষ যাওয়া আজ থেকে দুই দশক আগে দেখা মিললেও বর্তমান সময়ে দেখা মেলা ভার।
ডাকরা পাগলপাড়া গ্রামের এতেন আলীর ছেলে বরকত আলী শুধু সখের বসেই ১২ বছর বয়স থেকেই ঘোড়াকেই সঙ্গী করে রেখেছেন।
বরকত আলী জানান, তার বাবা এই গ্রামের মধ্যেবিত্ত পরিবারের একজন ব্যাক্তি ছিলেন। সেই সময় এসব এলাকায় চলাচল করার মতো কোন রাস্তা ঘাট বা যানবহনের কোন ব্যবস্থা ছিল না। তাই সে সময় সখের বসে একটি ঘোড়া কিনেছিলেন। সেই যুবক বয়স থেকে ঘোড়াই ছিল তার চলাচলের সঙ্গি। ১০ থেকে ১২ বছর বয়সে ঘোড়াই চড়া শেখেন।সে থেকেই আজও হাট-বাজার, কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি সব জায়গাই ঘোড়ার পিঠে চড়েই ঘুরেন তিনি।
বরকত আলী আরো জানান, মুখে লোহার লাগাম, গলায় ঘুগরা, পিঠে উপর বেল্ট দিয়ে আটকানো জিন আর রাজকীয় পোশাক, মাথায় টুপি, জিনের উপর বসে এক হাতে চাবুক, অন্য হাতে লাগাম, খট, খট শব্দে ঘোড়ার পিঠে উঠে ঘুড়ে বেড়ানোর মজাই আলাদা। আধুনিক যুগে বিষয়টিকে অনেকই খারাপভাবে নেন। তাতে তার কিছু যায় আসে না।
তিনি জানান, আমার অনেক বয়স হয়ে গিয়েছে আসলে ঘোড়া পোষা অনেক কষ্টের ব্যাপার। তবুও তিনি ঘোড়া না দেখলে থাকতে পারে না। এখনো তিনি নিজ হাতে ঘোড়ার খাওয়ার দিয়ে থাকেন। তার খাওয়ার তালিকায় রয়েছে, ছোলা, দুধ, ঘাস, ভুষি ইত্যাদি। কষ্ট হলেও তিনি পুর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
No comments