অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা!||rajshahirdorpon24
অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা |
চারঘাট প্রতিনিধি :
চারঘাট বিভিন্ন এলাকায় অরক্ষিত রেলক্রসিং এর কারণে প্রতিনিয়তই বাড়ছে দুর্ঘটনা। এসব রেলক্রসিংয়ে কোনো গেটম্যান নেই, তেমনি রাখা হয়নি কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। ফলে উন্মুক্ত রেলগেট দিয়ে যানবাহন এবং পথচারীদের চলাচল করতে গিয়ে প্রায়শই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। যার ফলে ঘটছে প্রাণহানি। গত কয়েক বছরে এসব রেলক্রসিংয়ে অন্তত ২০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জন নিহত ও আহত হয়েছেন আরও অনেক মানুষ।
রেল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৮৬৭ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকার রাজশাহীর সাথে সারাদেশে যোগাযোগ স্থাপন করতে চারঘাট উপজেলার উপর দিয়ে ১০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হয় এই রেললাইন। তবে প্বার্শবর্তী সেকশনগুলোকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হলেও এ এলাকার রেললাইন ও রেলগেট গুলোর কোনো উন্নয়ন হয়নি। প্রতিদিন ২৫টির বেশি ট্রেন যাতায়াত করে এ উপজেলা দিয়ে। কিন্তু মান্ধাতার আমলের রেললাইন ও অরক্ষিত রেলগেটের কারণে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হোন পথচারীরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী থেকে দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালগাড়ি ট্রেনগুলো চারঘাট উপজেলার সরদহ ও নন্দনগাছী স্টেশন হয়ে চলাচল করে। দিনে ও রাতে মিলে প্রায় ২৫টি ট্রেন উপজেলায় ভেতরে দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দেয়। এই দীর্ঘ রেলপথে প্রায় ১২টি জায়গায় রেলক্রসিং পথ রয়েছে। রেলক্রসিং পথ গুলো হলো দিঘলকান্দি মোলস্নাপাড়া ঢালান, দিঘলকান্দি গাঙ্গনপাড়া, হলিদাগাছী, হলিদাগাছি সিগনাল, দৌলতপুর, শলুয়া ঢালান, বালুদিয়ার, নন্দনগাছি, কমকারপাড়া, বরকতপুর ও কালুহাটি। এগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র চারঘাট-রাজশাহী মহাসড়কের হলিদাগাছি এবং চারঘাট-পুঠিয়া রোডে নন্দনগাছি রেলক্রসিং এ গেটম্যান রয়েছে। এই দুটি রেলক্রসিং গেটম্যান থাকায় দুঘটনা না ঘটলেও অন্য রেলক্রসিংগুলোতে প্রায় ট্রেনের সাথে বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনের সাথে সংঘর্ঘ হচ্ছে।
গত বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে শলুয়া রেলক্রসিং এ ট্রেনের সাথে নসিমন গাড়ির সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এর সপ্তাহ দুই আগেও একই রেলক্রসিং এ ট্রেনের সাথে সিএনজির সংঘর্ষ হয়েছে। তাতেও অন্তত তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঝখান দিয়ে রেললাইন গেছে। রেলগেটের ওপর দিয়ে আঞ্চলিক সড়ক থাকায় প্রতিনিয়ত স্থানীয়রা যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু কোন রেলগেট এবং গেটম্যান না থাকায় এমন দুর্ঘটনায় পড়তে হয় মাঝে মধ্যেই। গতবছরও ট্রেন দুর্ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। শিগগিরই রেলগেট দেওয়ার দাবি জানান তারা। শলুয়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক মাহাবুর রহমান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এসব অরক্ষিত রেলগেটে গেটম্যানের ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পারাপার হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে লিখিতভাবে রেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি আমরা।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে উপজেলার প্রতিটি রেল ক্রসিংয়ে গেট ও গেটম্যান বসানো খুবই জরুরি। এ বিষয়ে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সভায় আলোচনা করা হবে। সরদহ স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলার ভিতরে প্রায় ১০ কি:মি: রেল পথে অনুমোদিত ৩টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২টিতে গেট ও গেটম্যান রয়েছে এবং বাকিগুলোতে নিজস্ব সতর্কতায় চলাচল করার জন্য জনসাধারণকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সব রেলক্রসিং বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।
No comments