প্রতি শতকে ৩৮ টাকা আত্মসাৎ ধুরইল ইউপিতে গভীর নলকুপে পুরো স্কীমে অবৈধ পুকুর খনন ! ||rajshahirdorpon24
ধুরইল ইউপিতে গভীর নলকুপে পুরো স্কীমে অবৈধ পুকুর খনন ! |
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের সীমান্ত সংলগ্ন মোহনপুর উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের (ইউপি) ভিমনগর-পালশা-বহালা মাঠে গভীর নলকুপ স্কীমের পুরো জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করা হয়েছে। একারণে গভীর নলকুপ অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে সরকারের প্রায় অর্ধকোটি টাকা ক্ষতি এবং প্রায় চারশ' বিঘা তিনফসলী জমি অনাবাদী হয়েছে। ফলে এলাকার প্রায় সহস্রাধিক কৃষি নির্ভর শ্রমজীবী পরিবার কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে, অনেকে কর্মের সন্ধানে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এ সকল পরিবারের কর্মক্ষমরা এসব কৃষি জমিতে শ্রমদিয়ে ও অসময়ে গবাদিপশুর চারণভুমি হিসেবে ব্যবহার করতো। তবে পুকুর সন্ত্রাসে সেই সব এখন কেবলই অতীত। এঘটনায় কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বিগত আশির দশকে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে বিলকুমারী বিলে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মান ও বিএমডিএর গভীর নলকুপ স্থাপন এবং আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ করে ভিমনগর-পালশা-বহালা বিল তিনফসলী জমিতে রুপান্তর করা হয়।
এসবের ফলে বদলে যায় এই এলাকার কৃষি নির্ভর
অর্থনীতি, কৃষি নির্ভর শ্রমজীবীরা হয়ে উঠে স্বাবলম্বী। স্থানীয়রা জানান, সাংসদ নিজে ও তার মদদে তার ঘনিষ্ঠ সহচর এক সময়ের শিবির কর্মী ধুরইল ইউপি আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন এবং স্বজনদের পুকুর সন্ত্রাসে তিনফসলী বিল এখন বাণিজ্যিক পুকুরে পরিণত হয়েছে। পুকুর নিয়ে করা হচ্ছে শুভঙ্করের ফাঁকি। শ্রেণী পরিবর্তন না করে পুকুর করে সেখানে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করে কোটি টাকা মুনাফা করা হলেও সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। সুত্র জানায় পৌর এলাকায় পুকুরের বার্ষিক কর ৫০ টাকা শতক, পৌরসভার বাইরে ৪০ টাকা শতক এবং কৃষি ও পতিত জমি ২ টাকা শতক। তারা এসব পুকুরে বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষ করলেও সরকারকে রাজস্ব দিচ্ছেন কৃষি বা পতিত জমি দেখিয়ে মাত্র ২ টাকা। অর্থাৎ প্রতি শতকে ৩৮ টাকা করে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের এসব দুর্নীতে সহায়তা করছে ভুমি অফিসের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী।
স্থানীয় বাসিন্দা বকুল হোসেন, আতাউর রহমান, মনির হোসেন বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, বিলে যদি পুকুর করা হবে তাহলে শত কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ, গভীর নলকুপ স্থাপন ও আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে কেনো ? তারা এসব অবৈধ পুকুর ভরাট করে কৃষি জমি রক্ষার দাবি করেছে। গত ২৯ জানুয়ারী শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, ভিমনগর-পালশা-বহালা বিলে গভীর নলকুপের আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন গুড়িয়ে দিয়ে পুকুর খনন ও মাটি বিভিন্ন জায়গায় নেয়া হচ্ছে, এতে বাঁধসহ রাস্তা হুমকির মুখে পড়েছে। আর পুরো স্কীম পুকুরে পরিণত হয়েছে, তবে কালের স্বাক্ষী হয়ে গভীর নলকুপটি মুর্তির মতো ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ সময় ধুরইল ইউপি চেয়ারম্যানের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনারা সাংবাদিক যা খুশি লিখেন আমাদের কাজ বন্ধ হবে না।
এবিষয়ে ধুরইল ইউপি আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার পুকুর না তবে যারা কাটছেন তারা আমার লোক। এবিষয়ে জানতে চাইলে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানওয়ার হোসেন বলেন তিনি এই সম্পর্কে অবগত না। তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
No comments