চারঘাটের এক ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগ নেতাকে ফাঁসাতে মাদক কারবারির কান্ড! Rajshahirdorpon24
![]() |
ছবি-ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী |
চারঘাট প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর চারঘাটে স্থানীয় এক সনামধন্য ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগ নেতাকে ফাঁসাতে দুই যুবককে নির্যাতনের নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই মাদক কারবারির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রবিবার সকালে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন ও শলুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল ওয়াদুদ শুভ জড়িত মাদক কারবারিদের বিচার দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
অভিযুক্ত দুই মাদক কারবারির নাম নূর মোহাম্মদ পলক ও শাকিল রহমান। তারা দুজনেই উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের কানজগাড়ি এলাকার বাসিন্দা।
গত ১৮ ই আগষ্ট চারঘাট উপজেলার শলুয়ার গ্রামের মোহন আলী ও মোশাররফ হোসেন মছু নামে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে পানিতে চুবিয়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওটি গত ৯ জুলাই ধারণ করা। ভিডিওটি নূর মোহাম্মদ পলকের আইডি থেকে ভাইরাল করা হয়েছে। ভিডিওর একটি অংশে পলকের কন্ঠও শোনা গেছে। অথচ পলক নিজের দোষ ঢাকতে ওই ব্যবসায়ী এবং ছাত্রলীগ নেতাকে জড়িয়ে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছেন। তার ফেসবুক পোষ্টের পর ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন, আগে নানা রকম ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলেও গত ৫-৬ বছর ধরে আমি মাছ চাষের সাথে জড়িত। পুকুর লিজ নিয়ে মাছের ব্যবসা করি। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় আমার ১০-১২টি মাছ চাষের পুকুর লিজ নেওয়া আছে। নির্যাতনের ঘটনার দিন আমি এলাকাতেই ছিলাম না। ঘটনার দুদিন আগে আমি পুকুর থেকে মাছ সংগ্রহ করে ট্রাকে করে ঢাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। এসে শুনছি চুরির টাকা আদায় করতে এলাকার দুজন নিরীহ ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। কদিন পরে আমার পরিচিত কয়েকজন আমাকে জানায় মাদক কারবারি পলক নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে দিয়েছে এবং আমি নির্যাতন করেছি বলে প্রচার করেছে। অথচ আমি এ ঘটনার কিছুই জানি না।ভুক্তভোগীরাও আমার ব্যাপারে থানা কিংবা কোথাও কোনো অভিযোগও করেনি। কারণ এ ঘটনায় আমি কোনো ভাবেই সম্পৃক্ত না। অথচ একটি মাদক কারবারি গোষ্ঠী পরিকল্পিত ভাবে আমার সম্মান নষ্ট করতে মিথ্যা প্রচারে লিপ্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কানজগাড়ি এলাকায় আমার একটি পুকুর আছে। ওই পুকুরের পাশে মাদক কারবারি পলক বিভিন্ন সময় মাদক বিক্রি করতো। আমি কয়েকদিন সেখানে মাদক বিক্রি করতে নিষেধ করেছি। এরপর একদিন সে এসে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এরপর আমি যখন এলাকায় ছিলাম না তখন এ ঘটনা ঘটিয়ে আমার নামে প্রচার করেছে।
আরেক ভুক্তভোগী শলুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ শুভ বলেন, রাজনৈতিক ভাবে ফায়দা নিতেই আমাকে এ ঘটনায় জড়ানো হয়েছে। এলাকার সবাই জানে আমি মাদক বিরোধী নানা রকম কার্যক্রমের সাথে জড়িত। মাদক কারবারি পলক ও শাকিলকেও মাদক বিক্রি করতে নানা সময় বাধা দিয়েছি। তারা সরকার বিরোধী চক্রের সাথে জড়িত। তারা আমাকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসাতেই নিজেরা নির্যাতন করে আমার নাম জড়িয়েছে। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
জানতে চাইলে নির্যাতনের শিকার মোশাররফ হোসেন মছু বলেন, আমাকে বাড়ি থেকে পলক ও তাঁর বাহিনীর লোকজন চোখ বেঁধে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এরপর নির্মম নির্যাতন করেছে। ঘটনার সময় মুক্তার হোসেন কিংবা শুভ কাউকেই দেখিনি। তাঁদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগও নেই।
আরেক নির্যাতনের শিকার মোহন আলীর বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে কে বা কারা নির্যাতন করেছে এখনো শনাক্ত করতে পারিনি। তবে আমি মুক্তার হোসেন ও শুভকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি ও জানি। তারা এ ঘটনায় জড়িত না।
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মূল অভিযুক্ত নূর মোহাম্মদ পলক বলেন, ভিডিও আমি আপলোড করেছি তবে এ ঘটনায় আমি জড়িত না। ভিডিও তিনি কোথায় পেয়েছেন তা জানতে চাইলে তিনি তড়িঘড়ি করে ফোন কেটে দেন।
ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বলেন, ভিডিও দেখে ও লোকমুখে শুনে আমরা বিষয়টির খোঁজ খবর নিয়েছি। তবে ভুক্তভোগীরা কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments